পাতা:শকুন্তলা (ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর).djvu/৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০
শকুন্তলা

কথা কহে নাই; কিন্তু আমি কথা কহিতে আরম্ভ করিলে অনন্যচিত্তা হইয়া স্থির কর্ণে শ্রবণ করিয়াছে। আর নয়নে নয়নে সঙ্গতি হইলে মুখ ফিরাইয়া লইয়াছে; কিন্তু অন্য দিকেও অধিক ক্ষণ চাহিয়া থাকে নাই। আর প্রস্থান কালে, কয়েক পদ মাত্র গমন করিয়া, কুশের অঙ্কুরে পদতল ক্ষত হইল এই বলিয়া দাঁড়াইয়া রহিল; এবং কুরুবক শাখায় বল্কল লাগিয়াছে এই বলিয়া বল্কল মোচনচ্ছলে আমার দিকে মুখ ফিরাইয়া সতৃষ্ণ নয়নে নিরীক্ষণ করিতে লাগিল। মাধব্য কহিলেন বয়স্য! তবে তোমার মনোরথ সিদ্ধির অধিক বিলম্ব নাই। তপোবন তোমার উপবন হইয়া উঠিল। রাজা কহিলেন বয়স্য! কোন কোন তপস্বীরা আমাকে চিনিতে পারিয়াছেন। এখন বল দেখি কি ছলে কিছু দিন তপোবনে থাকি। মাধব্য কহিলেন কেন অন্য ছলের প্রয়োজন কি? তুমি রাজা, তপোবনে গিয়া তপস্বীদিগকে বল রাজস্ব দাও। রাজা কহিলেন তপস্বীরা অন্যবিধ রাজস্ব দেন। তাহারা যে রাজস্ব দেন তাহা রত্নরাশি অপেক্ষাও সমধিক প্রার্থনীয়। দেখ, প্রজারা রাজাদিগকে যে রাজস্ব দেয় তাহা বিনশ্বর; কিন্তু তপস্বীরা তপস্যার ষষ্ঠাংশ স্বরূপ অবিনশ্বর রাজস্ব প্রদান করিয়া থাকেন।