পাতা:শকুন্তলা (ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর).djvu/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
শকুন্তলা

করিবে। প্রথম সন্দর্শন দিবসে প্রস্থান কালে সতৃষ্ণনয়নে বারংবার নিরীক্ষণ করিয়াছিল তথাপি এখন কি কহিবে এই ভয়ে কাতর হইতেছি।

 শকুন্তলা কহিলেন যে অবধি সেই রাজর্ষি আমার নয়নগোচর হইয়াছেন—এই মাত্র কহিয়া লজ্জায় নম্রমুখী হইয়া রহিলেন আর অধিক কহিতে পারিলেন না। তখন তাঁহারা উভয়ে কহিলেন সখি! বল, বল; আমাদের নিকট লজ্জা কি। তখন শকুন্তলা কহিলেন সেই অবধি তাহাতে অনুরাগিণী হইয়া আমার এই অবস্থা ঘটিয়াছে। এই বলিয়া বিষণ্ণ বদনে অশ্রুপূর্ণ নয়নে লজ্জায় অধোমুখী হইয়া রহিলেন। অনসূয়া ও প্রিয়ংবদা সাতিশয় প্রীত হইয়া কহিলেন সখি! সৌভাগ্য ক্রমে তুমি অনুরূপ পাত্রেই অনুরাগিণী হইয়াছ; অথবা মহানদী সাগর পরিত্যাগ করিয়া আর কোন্ জলাশয়ে প্রবেশ করিবেক?

 রাজা শুনিয়া আহ্লাদ সাগরে মগ্ন হইয়া কহিতে লাগিলেন যা শুনিবার তা শুনিলাম; এত দিনের পর তাপিত প্রাণ শীতল হইল। শকুন্তলা কহিলেন অতএব, যদি তোমাদের মত হয় তবে এমন কোন উপায় কর যাহাতে আমি সেই রাজর্ষির অনুকম্পার পাত্র হই।