পাতা:শকুন্তলা (ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর).djvu/৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৮
শকুন্তলা

শকুন্তলা যাইবে বলিয়া আমার মন উৎকণ্ঠিত হইতেছে, নয়ন বাষ্পবারিপরিপূর্ণ হইতেছে, কণ্ঠরোধ হইয়া বাক্‌শক্তিরহিত হইতেছি, জড়তায় নিতান্ত অভিভূত হইতেছি। কি আশ্চর্য্য! আমি বনবাসী, স্নেহবশতঃ আমারও ঈদৃশ বৈক্লব্য উপস্থিত হইতেছে, না জানি সংসারীরা এমত অবস্থায় কি দুঃসহ ক্লেশ ভোগ করিয়া থাকে। বুঝিলাম স্নেহ অতি বিষম বস্তু! পরে শোকাবেগ সংবরণ করিয়া শকুন্তলাকে কহিলেন বৎসে! বেলা হইতেছে, প্রস্থান কর, আর অনর্থক কাল হরণ করিতেছ কেন। এই বলিয়া তপোবনতরুদিগকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন হে সন্নিহিত তরুগণ! যিনি তোমাদিগকে জলসেক না করিয়া কদাচ অগ্রে জলপান করিতেন না, যিনি ভূষণপ্রিয়া হইয়াও স্নেহবশতঃ তোমাদের পল্লব ভঙ্গ করিতেন না, তোমাদের কুসুম প্রসবের সময় উপস্থিত হইলে যাঁহার আনন্দের সীমা থাকিত না, সেই শকুন্তলা পতিগৃহ যাইতেছেন তোমরা সকলে অনুমতি কর।

 অনন্তর, সকলে গাত্রোথান করিলেন। শকুন্তল,গুরুজনদিগকে প্রণাম করিয়া,প্রিয়ংবদার নিকটে গিয়া অশ্রুপূর্ণ নয়নে কহিতে লাগিলেন সখি! আর্য্যপুত্রকে দেখিবার নিমিত্ত আমার চিত্ত অত্যন্ত ব্যগ্র হইয়াছে বটে; কিন্তু