অশ্রুপূর্ণ নয়নে কহিলেন অনসূয়া প্রিয়ংবদাও কি এই খান হইতে ফিরিয়া যাইবে। ইহার সেই পর্য্যন্ত আমার সঙ্গে যাউক। কণ্ব কহিলেন বৎসে। ইহাদের বিবাহ হয় নাই। অতএব সে পর্য্যন্ত যাওয়া উপযুক্ত নয়; গোতমী তোমার সঙ্গে যাবেন। শকুন্তলা পিতাকে আলিঙ্গন করিলেন। দুই চক্ষে ধারা বহিতে লাগিল। তখন কণ্ব কহিলেন বৎসে! এত কাতর হইতেছ কেন; তুমি পতিগৃহে গিয়া গৃহিণী পদে প্রতিষ্ঠিত হইয়া সাংসারিক কার্য্যে অনুক্ষণ এৰূপ ব্যস্ত থাকিবে যে আমার বিরহজনিত শোক অনুভব করিবার অবকাশ পাইবে না। শকুস্তল পিতার চরণে নিপতিত হইয়া কহিলেন তাত! আবার কত দিনে এই তপোবনে আসিব। কণ্ব কহিলেন বৎসে! সসাগরা ধরিত্রীর একাধিপতির মহিষী হইয়া, এবং অপ্রতিহতপ্রভাব স্বীয় তনয়কে সিংহাসনে সন্নিবেশিত ও তদীয় হস্তে সমস্ত সাম্রাজ্যের ভার সমর্পিত দেখিয়া, পতি সমভিব্যাহারে পুনর্ব্বার এই শান্তরসাস্পদ তপোবনে আসিবে।
শকুন্তলাকে এই ৰূপ শোকাকুলা দেখিয়া গোতমী কহিলেন বাছা! আর কেন, ক্ষান্ত হও, যাবার বেলা বহিয়া যায়। সখীদিগকে যাহা কহিতে হয় কহিয়া লও।