পাতা:শকুন্তলা (ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর).djvu/৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৬
শকুন্তলা

বলিতেছি যাহা শুনিলে অবশ্যই তোমার পূর্ব্ববৃত্তান্ত স্মরণ হইবেক। রাজা কহিলেন এক্ষণে শুনা আবশ্যক; কি বলিয়া আমার প্রতীতি জন্মাইতে চাও, বল। শকুন্তলা কহিলেন মনে করিয়া দেখ, এক দিন তুমি ও আমি দুজনে নবমালিকা মণ্ডপে বসিয়া ছিলাম। তোমার হস্তে একটী জলপূর্ণ পদ্মপত্রের ঠোঙা ছিল। রাজা কহিলেন ভাল, বলিয়া যাও, শুনিতেছি। শকুন্তলা কহিলেন সেই সময়ে আমার কৃতপুত্র দীর্ঘাপাঙ্গ নামে মৃগশাবক তথায় উপস্থিত হইল। তুমি উহাকে সেই জল পান করিতে আহ্বান করিলে। তুমি অপরিচিত ৰলিয়া সে তোমার নিকটে আসিল না। পরে আমি হন্তে করিলে, সে আসিয়া অনায়াসে পান করিল। তখন তুমি পরিহাস করিয়া কহিলে সকলেই সজাতীয়ে বিশ্বাস করিয়া থাকে। তোমরা দুজনেই জঙ্গলা, এই জন্য ও তোমার নিকটে আসিল।

 রাজা শুনিয়া ঈষৎ হাস্য করিয়া কহিলেন কামিনীদিগের এইরূপ মধুমাখা প্রবঞ্চনাবাক্য বিষয়াসক্ত ব্যক্তিদিগের বশীকরণমন্ত্রস্বরূপ। গোতমী শুনিয়া কিঞ্চিৎ কোপ প্রদর্শন করিয়া কহিলেন মহাভাগ! এ জন্মাবধি তপোবনে প্রতিপালিত, প্রবঞ্চনা কাকে বলে জানে না। রাজা কহিলেন তাপসবৃদ্ধে! প্রবঞ্চনা স্ত্রীজাতির স্বভাবসিদ্ধ