পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৪
শকুন্তলা।

না হয়। রাজা কহিলেন, শকুন্তলা নিতান্ত পরাধীনা; বিশেষতঃ, কুলপতি কণ্ব এক্ষণে আশ্রমে নাই। মাধব্য কহিলেন, ভাল বয়স্য! তোমায় এক কথা জিজ্ঞাসা করি, বল দেখি, তোমার উপর তার অনুরাগ কেমন? রাজা কহিলেন, বয়স্য! তপস্বিকন্যারা স্বভাবতঃ অপ্রগল‍্ভস্বভাবা; তথাপি তাহার আকার ইঙ্গিতে আমার প্রতি অনুরাগের স্পষ্ট চিহ্ন লক্ষিত হইয়াছে— যত ক্ষণ আমার সম্মুখে ছিল, আমার সহিত কথা কয় নাই; কিন্তু আমি কথা কহিতে আরম্ভ করিলে, অনন্যচিত্তা হইয়া স্থির কর্ণে শ্রবণ করিয়াছে; নয়নে নয়নে সঙ্গতি হইলে, মুখ ফিরাইয়া লইয়ছে, কিন্তু অন্য দিকেও অধিক ক্ষণ চাহিয়া থাকে নাই। আবার প্রস্থানকালে কয়েকপদমাত্র গমন করিয়া, কুশের অঙ্কুরে পদতল ক্ষত হইল, চলিতে পারি না, এই বলিয়া দাঁড়াইয়া রহিল, আর কুরবকশখায় বল্কল লাগিয়াছে, এই বলিয়া বল্কলমোচনচ্ছলে বিলম্ব করিয়া, আমার দিকে মুখ ফিরাইয়া সতৃষ্ণ নয়নে বারংবার নিরীক্ষণ করিতে লাগিল। এ সকল অনুরাগের লক্ষণ বই আর কি হতে পারে? মাধব্য কহিলেন, বয়স্য! তবে তোমার মনোরথসিদ্ধির অধিক বিলম্ব নাই। ভাগ্যক্রমে, তপোবন তোমার উপবন হইয়া উঠিল। রাজা কহিলেন, বয়স্য! কোনও কোনও তপস্বীরা আমায় চিনিতে পারিয়াছেন। বল দেখি, এখন কি ছলে