পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় পরিচ্ছেদ।
৪৫

যথার্থই এরূপ হইয়াছি বটে। নিরস্তুর অন্তরতাপে তাপিত হইয়া, আমার শরীর বিবর্ণ হইয়া গিয়াছে; এবং দুর্বল ও কৃশও যৎপরোনাস্তি হইয়াছি।

 প্রিয়ংবদা কহিলেন, অনসূয়ে! শকুন্তলার প্রণয়পত্রিকা করা যাউক; সেই পত্রিকা, আমি পুষ্পের মধ্যগত করিয়া, নির্ম্মাল্যচ্ছলে রাজর্ষির হস্তে দিয়া আসিব। অনসূয়া কহিলেন, সখি! এ অতি উত্তম পরামর্শ; দেখ, শকুন্তলাই বা কি বলে। শকুন্তলা কহিলেন, সখি! আমাকে আর কি জিজ্ঞাসা করিবে? তোমাদের যা ভাল বোধ হয় তাই কর। তখন প্রিয়ংবদা কহিলেন, তবে আর বিলম্বে কাজ নাই; মনোমত একখানি পত্রিকা রচনা কর। শকুন্তলা কহিলেন, সখি! রচনা করিতেছি; কিন্তু পাছে তিনি অবজ্ঞা করেন, এই ভয়ে আমার হৃদয় কম্পিত হইতেছে।

 রাজা শকুন্তলার আশঙ্কা শুনিয়া ঈষৎ হাস্য করিলেন, এবং তাঁহাকে উদ্দেশ করিয়া কহিতে লাগিলেন, সুন্দরি! তুমি যাহার অবজ্ঞাভয়ে ভীত হইতেছ, সে এই তোমার সমাগমের নিমিত্ত একান্ত উৎসুক হইয়া রহিয়াছে; তুমি কি জান না, রত্ন কাহারও অন্বেষণ করে না, রত্নেরই অন্বেষণ সকলে করিয়া থাকে।

 অনসূয়া ও প্রিয়ংবদাও, শকুন্তলার আশঙ্কা শুনিয়া, কহি-