পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (অষ্টম সম্ভার).djvu/২৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छाप्लिङ भोहै তখন আর আমার কোন চিন্তা নাই । যদি কোনদিন এদিকে ফিরে আঙ্গি, যেন দেখতে পাই, আমার পাঠশালার একটি ছাত্রও মানুষ হয়েছে। আমি সেইদিনে শুধু চরণের দুঃখ ভুলব । দুর্গাদাসবাৰু এ-কয়দিন সৰ্ব্বদাই উপস্থিত থাকিতেন। নিরতিশয় ক্ষুব্ধ হইয়া বলিলেন, বৃন্দাবন, তোমাকে সাৰনা দেবার কথা খুজে পাইনে বাবা! কিন্তু দুঃখ যত বড়ই হোক, সহ করাই ত মনুষ্যত্ব। অক্ষম অপারগ হয়ে সংসার ত্যাগ করা কখনই ভগবানের অভিপ্রায় নয়। বৃন্দাবন মুখ তুলিয়া মৃদ্ধকণ্ঠে কহিল, সংসার ত্যাগ করার কোন সঙ্কল্প ত আমার নেই মাস্টারমশাই। বরং সে ত একেবারে অসম্ভব ! ছেলেদের মুখ না দেখতে পেলে আমি একদিনও বঁচিব না। আপনার দয়ায় আমি পণ্ডিতমশাই বলে সকলের পরিচিত, আমার এ সম্মান আমি কিছুতেই হাতছাড়া করব না, আবার কোথাও গিয়ে এই ব্যবসাই আরম্ভ করে দেব । দুর্গাদাসবাবু বলিলেন, কিন্তু তোমার সর্বথ ত জলকষ্ট মোচনের জন্ত দান করে গেলে, তোমাদের ভরণপোষণ হবে কি করে ? 哆 বৃন্দাবন সলজ্জ হাঙ্গে দেয়ালে টাঙানো ভিক্ষার ঝুলি দেখাইয়া বলিল, বৈঞ্চবের ছেলের কোথাও মুষ্টি-ভিক্ষার অভাব হবে না মাস্টারমশাই, এইতেই আমার বাকী দিনগুলো স্বচ্ছন্দে কেটে যাবে। তা ছাড়া সম্পত্তি আমার চরণের, আমি তারই সঙ্গী-সার্থীদের জন্তে দিয়ে গেলাম । দুর্গাদাস ব্রাহ্মণ এবং প্রবীণ হইলেও শ্রান্ধের দিন উপস্থিত থাকিয়া সমস্ত তত্ত্বাবধান করিয়াছিলেন, তাই তিনিও কুস্কমের যথার্থ পরিচয় জানিতে পারিয়াছিলেন । এখন তাহাই স্মরণ করিয়া বলিলেন, সেটা ভাল হবে না বাবা, তোমার কথা স্বতন্ত্র, কিন্তু বৌমার পক্ষে সেটা বড় লজ্জার কথা । এমন হতেই পারে না বৃন্দাবন । - বৃন্দাবন মুখ নীচু করিয়া কহিল, তিনি তার ভায়ের কাছেই যাবেন। দুর্গাদাস বৃন্দাবনকে ছেলের মত স্নেহ করিতেন, তাহার বিপদে এবং সৰ্ব্বোপরি এই গৃহত্যাগের সঙ্কল্পে যৎপরোনাস্তি ক্ষুব্ধ হইয়া নিবৃত্ত করিবার শেষ চেষ্টা করিয়া বলিলেন, বৃন্দাবন, জন্মভূমি ত্যাগ করবার আবশুকতা কি ? এখানে বাস করেও ত পূর্বের মত সমস্ত হতে পারে। বৃন্দাবনের চোখ ছল ছল করিয়া উঠিল, বলিল, ভিক্ষা ছাড়া আমার আর উপায় নেই, কিন্তু সে আমি এখানে পারব না । তা ছাড়া, এ-বাড়িতে যে দিকেই চোখ পড়ছে, সেই দিকেই তার ছোট হাত দুখানির চিহ্ন দেখতে পাচ্ছি। আমাকে ক্ষমা করুন মাস্টারমশাই, আমি মাস্থ্য, মামুষের মাথা এ গুরুভারে গুড়ো হয়ে যাবে ।