পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (অষ্টম সম্ভার).djvu/২৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

cबजििने অনতিপূৰ্ব্বে নিজের ঘরে বসিয়া বড়বোঁ স্বামীকে উপলক্ষ ও মেজৰোঁকে লক্ষ্য করিয়া চীৎকার শঙ্কে যে-সকল অপভাষার তীর ছুড়িয়াছিলেন, তাহার একটিও নিফল হয় নাই। সব ক'টি আলিয়াই হেমাঙ্গিনীকে বিধিয়াছিল এবং প্রত্যেকটি মুখে করিয়া "যে পরিমাণ বিষ বহিয়া আনিয়াছিল, তাহার আলাটাও কম জলিতেছিল না। কিন্তু মাঝখানে ভাণ্ডর বিদ্যমান থাকায় হেমাঙ্গিনী সহ করা ব্যতীত প্রতিকারের পথ পাইতেছিলেন না। আগেকার দিনে যেমন যবনের গরু স্বমুখে রাখিয়া রাজপুত-সেনার উপর বাণ বর্ষণ করিত, যুদ্ধ জয় কবিত, বড়বে মেজবোঁকে আজকাল প্রায়ই তেমনি জাদ করিতেছিলেন । স্বামীর কথায় হেমাঙ্গিনী দপ করিয়া জলিয়া উঠিলেন, কহিলেন, বল কি, তিনি পৰ্য্যন্ত রাগ করেচেন ? এ ত বড় আশ্চৰ্য্য কথা, শুনলে হঠাৎ বিশ্বাস হয় না যে ! এখন কি করলে রাগ থামবে বল ? বিপিন মনে মনে রাগ করিলেন, কিন্তু বাহিরে প্রকাশ করা তাহার স্বভাব নয়, তাই মনের ভাব গোপন করিয়া সহজভাবে বলিলেন, হাজার হলেও গুরুজনের সম্বন্ধে কি— · - কথাটা শেষ হইবার পূর্বেই হেমাঙ্গিনী কহিলেন, সব জানি, ছেলেমাহুষটি নই যে, গুরুজনের মান-মৰ্য্যাদা বুঝি নে ! কিন্তু ছোড়াটাকে ভালবাসি বলেই যেন ওঁরা আমাকে দেখিয়ে দেখিয়ে ওকে দিবারাত্র বিধতে থাকেন। র্তাহার কণ্ঠস্বর কিছু নরম শুনাইল । কারণ, হঠাৎ ভাণ্ডরের সম্বন্ধে শ্লেষ করিয়া ফেলিয়া তিনি নিজেই মনে মনে অপ্রতিভ হইয়াছিলেন । কিন্তু তাহারও গায়ের জালাটা নাকি বড় জলিতেছিল, তাই রাগ সামলাইতে পারেন নাই। বিপিন গোপনে ও-পক্ষে ছিলেন । কারণ, এই একটা পরের ছেলে লইয়া নিরর্থক দাধাদের সঙ্গে ঝগড়া-বাটি তিনি মনে মনে পছন্দ করিতেন না। স্ত্রীর এই লজ্জাটুকু লক্ষ্য করিয়া জো পাইয়া জোর দিয়া বলিলেন, বেঁধা-বিধি কিছুই নয়। তারা নিজেদের ছেলে শাসন করছেন, কাজ শেখাচ্ছেন, তাতে তোমাকে বিধলে চলবে কেন ? তা ছাড়া যা-ই করুন, তারা গুরুজন যে ! - হেমাঙ্গিনী স্বামীর মুখের পানে চাহিয়া প্রথমটা কিছু বিস্থিত হইলেন। কারণ, এই পনের-ষোল বছরের ঘর-কল্পায় স্বামীর এত বড় ভ্রাতৃভক্তি তিনি ইতিপূৰ্ব্বে দেখেন নাই। কিন্তু পরমুহূর্তেই তাহার সর্বাঙ্গ ক্রোধে জলিয়া উঠিল । কহিলেন, তারা গুরুজন, আমিও মা । গুরুজন নিজের মান নিজে নিঃশেষ করে আনলে আমি কি দিয়ে ভৰ্ত্তি করৰ ! বিপিন কি একটা জৰাৰ বোধ করি দিতে যাইতেছিলেন, খামিয় গেলেন । ኧፀመ wo-ex