পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (অষ্টম সম্ভার).djvu/৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ફછેઃ ইস-চারটে পয়সা দাম হয় না, তা আবার দু’জান ? আমি নিতে চাইনে । লোকটাকে বোধ হয় চিনাইয়া দিতে হইবে না ; ইনি আমাদের হারাণচন্দ্ৰ ! হারাণচন্দ্র নিকটবৰ্ত্তী একটা বৃক্ষতলে উপবেশন করিয়া দোকানদারের বাপাস্ত 'করিতে করিতে পুটুলি খুলিয়া মুঠা মুঠ চাল চৰ্ব্বন করিতে লাগিলেন। এত চাল কি চার পয়সায় দেওয়া যায় ? সমস্ত দিনের মেহনতের দাম কি চার পয়সা ? আডডধারীর কাছে নিয়ে যাই ত চারদিনের মোঁতাত যোগায়, কিন্তু সেখানে কি যাওয়া যায় ? ছিঃ –ব্যাটারা ভিক্ষে-করা চাল চিনে ফেলবে । তা হলে ? ছি-ছি-ছি— বাড়ি নিয়ে যাব ? কিন্তু এ ক'টি চাল কার মুখে দেব ? কাজ নেই। হারাণচন্দ্র পুটুপিটি গুছাইয়া বাধিয়া আবার সেই দোকানে আসিয়া দাড়াইলেন। দোকানদারকে ডাকিয়া বলিলেন, চাল নাও । চার পয়সায় দিবি ত ? | | তবে ঐ ধামাতে ঢেলে দে । হারাণচন্দ্র একটা পাত্রে চালগুলি ঢলিয়া দিয়া হাত পাতিলেন । দোকানদারের নিকট চারিটা পয়সা গ্রহণ করিয়া কিয়দ আসিয়া হারাণচন্দ্র একচেটি খুব হাসিয়া লইলেন । কেমন ব্যাটাকে ঠকিয়েছি, হারামজাদার যেমন কৰ্ম্ম তেমন ফল দিয়েছি । অৰ্দ্ধেক চাল খেয়ে ফেলেছি। ব্যাটা ধরতেও পারেনি। দোকানদার যে ধরিবার চেষ্টা পৰ্য্যন্ত করে নাই হারাণচন্দ্র তাহ একবারও মনে করিলেন না। মনের আনন্দে হাসিতে হাসিতে সন্ধ্যার অন্ধকারে গুলিখানার ঝাপ খুলিয়া তন্মধ্যে প্রবেশ করিলেন । আর কাজ নাই ; আমরা অন্যত্র যাই । 》き আর ত পারি না মা ! তিন দিন উপবাস করিয়া শুভদা কন্যা ললনার গলা ধরিয়া রুদ্ধাবেগে কাদিয়া ফেলিল । ললনা সযত্নে মাতৃ-অশ্রুবিন্দু মুছাইয়া দিয়া বলিল, কেন মা অমন কর, এদিন কিছু চিরকাল থাকবে না—আবার স্বদিন হবে । শুভদা কাদিতে কাদিতে বলিল, ঈশ্বর করুন তাই যেন হয়, কিন্তু আর ত সয় না । চোখের উপর তোদের এত দুর্দশা মা হয়ে আর দেখতে পারিনে। আমি মা গঙ্গার কোলে ডুব দিই, তুই মা যেমন করে পারিস এদের দেখিস। দোরে দোরে ভিক্ষে করিল —উৎ-মা হয়ে আর পারিনে । eva