পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/১৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ কাছে আজ হঠাৎ ঠেকবে, কিন্তু এ যে আমার রাত্রিদিনের ভাবনা। তুমি কি ভাবে অধৰ্ম্মপথের উপার্জন দিয়ে আমি ঠাকুর-দেবতার সেবা করি ? সে অর্থের এক কণা তোমায় চিকিৎসায় খরচ করলে তোমাকে কি বাচাতে পারতুম ? ভগবান আমার কাছ থেকে তোমাকে কেড়ে নিতেন । আমি যে তোমারই এ কথা সত্যি বলে তুমি বিশ্বাস কর কই ? বিশ্বাস করি ত । না, করে না । তাহার প্রতিবাদের তাৎপৰ্য্য বুঝিলাম না । সে বলিতে লাগিল, কমললতার সঙ্গে পরিচয় তোমার দু'দিনের, তবু তার সমস্ত কাহিনী তুমি মন দিয়ে শুনলে, তোমার কাছে তার সকল বাধা ঘুচলো—সে মুক্ত হয়ে গেল। কিন্তু আমাকে কখনো জিজ্ঞাসা করলে না কোন কথা, কখনো বললে না, লক্ষ্মী তোমার সব ঘটনা আমাকে খুলে বল। কেন জিজ্ঞাসা করনি ? করনি ভয়ে । তুমি বিশ্বাস কর না আমাকে, তুমি বিশ্বাস করতে পারো না আপনাকে । বলিলাম, তাকে ও জিজ্ঞাসা করিনি, জানতেও চাইনি। নিজে সে জোর করে শুনিয়েচে । রাজলক্ষ্মী বলিল, তবু ত শুনেচ । সে পর, তার বৃত্তাস্ত শুনতে চাওনি প্রয়োজন নেই বলে । আমাকেও কি তাই বলবে নাকি ? ন, তা বলব না। কিন্তু তুমি কি কমললতার চেলা ? সে যা করচে তোমাকেও তাই করতে হবে ? ও-কথায় অামি ভুলব না। আমার সব কথা তোমাকে শুনতে হবে । এ ত বড় মুস্কিল ! আমি চাইনে শুনতে, তবু শুনতেই হবে। ই, হবে । তোমার ভাবনা, শুনলে হয়ত আমাকে আর ভালোবাসতে পারবে না, হয়ত বা আমাকে বিদায় দিতে হবে । তোমার বিবেচনায় সেটা তুচ্ছ ব্যাপার নাকি ? রাজলক্ষ্মী হাসিয়া ফেলিয়া বলিল, না, সে হবে না—তোমাকে শুনতেই হবে । তুমি পুরুষমানুষ, তোমার মনে এতটুকু জোর নেই যে উচিত মনে হলে, আমাকে দূর করে দিতে পার ? এই অক্ষমতা অত্যন্ত স্পষ্ট করিয়া কবুল করিয়া বলিলাম, তুমি যে-সকল জোরালো পুরুষদের উল্লেখ করে আমাকে অপদস্ত করচ লক্ষ্মী, তারা বীরপুরুষ— নমস্ত ব্যক্তি, তাদের পদধূলির যোগ্যতা আমার নেই। তোমাকে বিদায় দিয়ে একটা দিনও আমি থাকতে পারব না, হয়ত তখনি ফিরিয়ে আনতে দৌড়বি এবং তুমি না বলে বসলে আমার দুর্গতির অবধি থাকবে না। অতএব, এসকল ভয়াবহ 》 을,