পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/১৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বামুনের মেয়ে অনুভব করিতেন না। এখন ইহারই স্পষ্ট ইঙ্গিত অপরের মুখে শুনিয়া সহসা তিনি ধৈর্য্য রাখিতে পারিলেন না। তিক্তকণ্ঠে বলিয়া ফেলিলেন, শুনলে, অনেক জিনিসই শোনা যায় মামা, কিন্তু আমার মেয়ের কথা নিয়ে লোকেরই বা এত মাথা-ব্যথা কেন ? গোলোক মৃদু হাসিয়া ধীরভাবে বলিলেন, তা সত্যি বাছা ; কিন্তু সময়ে সাবধান না হলে লোকের পোড়ার মুখও যে বন্ধ করা যায় না জগে৷! জগদ্ধাত্রী ইহারও প্রত্যুত্তরে কি একটা বলিতে যাইতেছিলেন, কিন্তু ঠিক এই সময়েই সন্ধ্যার কাগু দেখিয়া তিনি ভয়ে বিস্ময়ে ও নিদারুণ ক্ৰোধে নিৰ্ব্বাঙ্গু হইয়া গেলেন। সন্ধ্যা পুকুর হইতে স্নান করিয়া বাড়ি ঢুকিতেছিল, তাহার কাপড় ভিজ, মাথার চুলের বোঝা হইতে জল ঝরিতেছে, এখনও মুছিবার অবকাশ হয় নাই—এই অবস্থায় পাশ কাটাইয়া সে দ্রুতবেগে নিজের ঘরে প্রবেশ করিল। গোলোক কহিলেন, মেয়ের জর বললিনে জগো ? সন্ধ্যেবেলায় নেয়ে এল যে ? জগদ্ধাত্রী কেবলমাত্র জবাব দিলেন, কি জানি মামা ! কিন্তু মনে মনে তিনি নিশ্চয় বুঝিয়াছিলেন, এ তাহারই বিরুদ্ধে অরুণের অপমানের গৃঢ় স্বকঠোর প্রতিশোধ । গোলোক কহিলেন, এমন অত্যাচার করলে যে বাড়াবাড়িতে দাড়বে ! জগদ্ধাত্রী কহিলেন, দাড়ালেই বা কি করব বল ? ও আমার হাতের বাইরে । গোলোক মাথা নাড়িতে-নাড়িতে বলিলেন, তা বুঝেচি । আচ্ছ, জিজ্ঞাসা করি এ-বাড়ির কর্তাটা কে ? তুই, না জামাই, না তোর মেয়ে ? জগদ্ধাত্রী বলিলেন, সবাই কৰ্ত্ত । গোলোক কহিলেন, তা হলে তাদের বলিস্ যে, পাড়ার মধ্যে ভুলে-বাগদী প্রজা রাখা চলবে না। তারা এর একটা ব্যবস্থা না করলে শেষে আমাকেই করতে হবে । মধুসূদন তুমিই ভরসা ! প্রত্যুত্তরে জগদ্ধাত্রী সক্রোধে ডাক দিলেন, সন্ধ্যে, এদিকে আয়! সন্ধ্য। ঘরের মধ্যে বোধ হয় মাথা মুছিতেছিল, একটুখানি মুখ বাড়াইয়া সাড়া দিল, কেন মা ? মা বলিলেন, স্কুলে মাগীদের পরাবি, না আমাকেই কাল নাইবার আগেই বাট। মেরে তাড়াতে হবে ? সন্ধ্যা কহিল, দুঃখী অনাথা মেয়ে দুটোকে বাটা মারা ত শক্ত কাজ নয় মা, কিন্তু ওরা কি কারও কোন ক্ষতি করেচে ? গোলোক ইহার জবাব দিলেন। কহিলেন, ক্ষতি করে বই কি পরশু বেড়িয়ে খাবার সময় দেখি পথের ওপর দাড়িয়ে ছাগলটাকে ফ্যান খাওয়াচ্চে ৷ ছিটকে כי שכי