পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/১৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ ছিটকে পড়চে ত ? বলিয়া তিনি জগদ্ধাত্রীর মুখের পানে চাহিলেন । জগদ্ধান্ত্রী তৎক্ষণাৎ সমর্থন করিয়া কহিলেন, পড়বে বই কি মামা । গোলোক কহিলেন, তবে সেই বল । না জেনে সাপের বিষ খাওয়া যায়, কিন্তু জেনে ত আর পারা যায় না ! সন্ধ্যার প্রতি চাহিয়া হাসিয়া কহিলেন, তোমার কাচা বয়স নাতনী, তুমি না হয় রাত্তিরেও নাইতে পার, কিন্তু আমি ত পারিনে । সন্ধ্যা অস্তরের দুৰ্দ্দমনীয় ক্রোধ চাপিয়া রাথিয়া বলিল, সে জানি ঠাকুদা, কিন্তু বাবা যখন ওদের স্থান দিয়েচেন, তখন আর কোথাও একটা আশ্রয় ন দিয়েও ত র্তার অপমান করতে পারিনে । মেয়ের এই মান-অপমানের ধারণায় মায়ের মুখ দিয়া রাগে কথা বাহির হইল না ; কিন্তু গোলোক বলিলেন, বেশ ত, তারই বা অভাব কি সন্ধ্যা ? অরুণের বাড়ির পিছনে ত ঢ়ের জায়গা আছে, তাকেই বল না আশ্রয় দিতে । বাগদী-দুলে হোক, তবু তারা হি দু—তাতে তার জাত যাবে না । এই বলিয়া তিনি জগদ্ধাত্রীর মুখের দিকে চাহিয়া মৃদু মৃদু হাসিতে লাগিলেন । র্তাহার রসিকতার রস-গ্রহণ জগদ্ধাত্রী যত বেণী না করুন, অরুণের কথায় পাছে র্তাহার কাণ্ডজ্ঞানহীন মেয়েটা ভয়ানক কঠোর কিছু বলিয়া বসে এই ভয়ে তাহার উৎকণ্ঠার অবধি রহিল না ! ঠিক তাহাই ঘটিল । সন্ধ্যর কণ্ঠস্বরে পরিহাসের তরুলত উছলিয়া উঠিল ; কিন্তু কথাগুলা শুনাইল যেমন তীক্ষ, তেমনি শক্ত,—কহিল, গেলেই বা কে তার জমা-খরচ রাখচে বলুন ? যে জাতই মানেই না, তার আবার যাওয়া আর থাকা ! গোলোক হাসিবার চেষ্টা করিলেন, কিন্তু মুখ তাহার কালো হইয়া উঠিল। বলিলেন, তোমার সঙ্গে এই সব বুঝি পরামর্শ চলে ? * সন্ধ্যা খিল খল করিয়া হাসিয়া উঠিয়া বলিল, হায়, হায়, ঠাকুৰ্দ্দ, সে । আপনাদেরই গ্রাহ করে না— কুকুর-বেড়ালের সামিল মনে করে, তা আমি ! এই বলিয়া সে বাদ-প্রতিবাদের অপেক্ষ মাত্র না করিয়া চক্ষের পলকে ঘরের মধ্যে অন্তহিত হইয়া গেল । জগদ্ধাত্রী আর সহ করিতে পারিলেন না, ধমক দিয়া উঠিলেন, হতভাগী ! পরের ছেলের নামে তুই মিথ্যে অপবাদ দিস । তাকে কে না জানে ? সে কখনো এ-কথা বলেনি—অামি গঙ্গার জলে দাড়িয়ে বলতে পারি। ঘরের মধ্য হইতে কোন প্রত্যুত্তর আসিল না। গোলোক কহিলেন, না জগো, আজকালকার ছেলে-মেয়েরা সব এমনই বটে, তা বেশ, না হয় কুকুর-বেড়ালই হলুম ; কিন্তু একটা কথা বলে ঘাই আজ, আর 8 לא