পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/২১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰন্থ BB BBBS BBBS BB BB BB BBS BB BBBBS BB BB BBBB ঠাকুরমা, তা হলে বাবাকে দিয়ে আমি খোজ করাতুম তারা সব এখন কে কোথায় আছেন । হয়ত আমার কত কাকা, কত জ্যাঠাইমা, কত ভাই-বোন সব আছেন, না ঠাকুরমা ? আহা, তাদের যদি সব জানতে পারা যেত! একটুখানি হাসিয়াই প্রশ্ন করিল, আচ্ছা ঠাকুরমা, ঠাকুৰ্দ্দামশাই কালে-ভত্রে কখনো এলে তাকে ক’টাকা দিতে হ’তো ? দর-দস্তুর নিয়ে তোমাদের সঙ্গে বুঝি ঝগড়া বেধে যেতো—ন ? d জগদ্ধাত্রী রাগ করিয়া উঠিলেন । বলিলেন, জ্যাঠাম রেখে ঠাকুরের শেতলের জোগাড়টা সেরে ফেল দিকি, সন্ধে ! ঠাকুরমা নিজেও একটু হাসিয়া বলিলেন, সমস্তই ত জানো দিদি, কিন্তু তৰু ত তোমাদের মোহ কাটে না ? এই সকল বিরুদ্ধ আলোচনা জগদ্ধাত্রীর গোড়া হইতেই ভাল লাগিতেছিল না এবং মনে মনে তিনি বিরক্তও কম হইতেছিলেন না, শাশুড়ীর কথার উত্তরে বলিলেন, তখনকার দিনের কথা জানিনে মা, কিন্তু এখন জত বিয়েও কেউ করে না, ওসৰ অত্যাচারও আর নেই। আর জন-কতক লোক যদি একসময়ে অন্যায় কয়েই থাকে, তাই বলে কি বংশের সম্মান কেউ ছেড়ে দেয় মা ? আমি বেঁচে থাকতে ত সে হবে না ? গৃমশ্বামিনী পুত্রবধুর উত্তপ্ত কণ্ঠস্বরে শাশুড়ী নীরব রইলেন, কিন্তু সন্ধ্যা ব্যথিত হইয়া উঠিল; সে পিতামহীর আর একটু কাছে গিয়া কোমল-স্বরে জিজ্ঞাসা করিল, কিন্তু কেন তারা অমন অত্যাচার করতেন ঠাকুরমা ? তাদের কি মায়াও হতো না ? ঠাকুরমা সন্ধ্যার হাত ধরিয়া তাহাকে পার্থে টানিয়া লইয়া বলিলেন, মায়া কি করে হবে দিদি ! একটি রাত ছাড়া যার সঙ্গে আর জীবনে হয়তো কখনো দেখা হবে না, তার জন্তে কি কারো প্রাণ র্কাদে ! আর সে অত্যাচার কি আজই থেমে গেছে ? তোমার ওপর যা হতে যাচ্চে সে কি কারও চেয়ে কম অত্যাচার দিদি ? জগদ্ধাত্রী হাতের কাজ রাখিয়া দিয়া অকস্মাৎ উঠিয়া দাড়াইয়া অত্যন্ত কঠোর স্বরে মেয়েকে উদ্দেশ করিয়া বলিলেন, তুই ঠাকুর-ঘরে যাবি, না আমি কাজ-কৰ্ম্ম ফেলে রেখে উঠে যাব, সন্ধ্যা ? সন্ধ্যা মায়ের মুখের দিকে চাহিল, কিন্তু কথাও কহিল না, উঠিবারও চেষ্টা করিল না। ধীরে ধীরে পিতামহীকে জিজ্ঞাসা করিল, কিন্তু, যে জিনিসটা এত সম্মান— এত দিন ধরে এমনভাবে আসচে ঠাকুরমা, তাকে কি নষ্ট হতে দেওয়াই ভাল ? এবার শাশুড়ীও বধূর কক্ষ কথায় বিশেষ কর্ণপাত করিলেন না। নাতিনীর প্রশ্নের জবাবে বলিলেন, কিছু একটা দীর্ঘদিন ধরে কেবল চলে আসচে বলেই তা ভাল হয়ে যায় না দিদি, সম্মানের সঙ্গে হলেও না। মাঝে মাঝে তাকে যাচাই করে,