পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (চতুর্থ সম্ভার).djvu/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঐকান্ত তবে কি করব ? আমরা যা করি। গোবিন্দজীর প্রসাদ কেউ আর কেড়ে নিতে পারবে না ! তা জানি। কিন্তু বৈরাগীগিরি আমার নতুন নয়। বৈষ্ণবী হাসিয়া বলিল, তা বুঝেচি, ধাতে সয় না বুঝি ? না, বেশীদিন সয় না । বৈষ্ণবী মুখ টিপিয়া হাসিল, কহিল, তোমার কমই ভাল। ভেতরে এসো, ওদের সঙ্গে ভাব করিয়ে দিই। এখানে কমলের বন আছে । তা শুনেচি । কিন্তু অন্ধকারে ফিরব কি করে ? বৈষ্ণবী পুনশ্চ হাসিল, কহিল, অন্ধকারে ফিরতেই বা আমরা দেব কেন ? অন্ধকার কাটবে গে কাটবে। তখন ষেয়ে । এসে । চলো । বৈষ্ণবী কহিল, গৌর ! গৌর । গৌর গেীর, বলিয়া আমিও অনুসরণ করিলাম। چئ যদিচ ধৰ্ম্মাচরণে নিজের মতিগতি নাই, কিন্তু বাহাদের আছে তাহাদের বিঘ্ন ঘটাই না । মনের মধ্যে নিঃসংশয়ে জানি, গুরুতর বিষয়ের কোন অন্ধিসন্ধি আমি কোন কালে খুজিয়া পাইব না। তথাপি ধাৰ্শ্বিকদের আমি ভক্তি করি। বিখ্যাত স্বামীজী ও স্বখ্যাত সাধুজী— কাহাকেও ছোট-বড় করি না, উভয়ের বাণীই আমার কর্ণে সমান মধু বর্ষণ করে । বিশেষজ্ঞদের মুখে শুনিয়াছি, বাঙলাদেশের আধ্যাত্মিক সাধনার নিগূঢ় রহস্ত বৈষ্ণব-সম্প্রদায়েই সুগুপ্ত আছে এবং সেইটাই নাকি বাঙলার নিজস্ব খাটি জিনিস । ইতিপূৰ্ব্বে সন্ন্যাসী-সাধুসঙ্গ কিছু কিছু করিয়াছি—ফললাভের বিবরণ প্রকাশ করিতে ইচ্ছা করি না, কিন্তু এবার যদি দৈবাং খাটি বস্তু কপালে জুটিয়া থাকে ত এ সুযোগ ব্যয় হইতে দিব না। সঙ্কল্প করিলাম। পুটুর বৌভাতের নিমন্ত্রণ আমাকে রাখিতে হইবে, অস্তুতঃ সে-কয়টাদিন কলিকাতার নিঃসঙ্গ মেসের পরিবর্তে বৈষ্ণবী-জাখড়াই আশেপাশে কোথাও কাটাইতে পারিলে আর যাই হোক জীবনের সঞ্চয়ে বিশেষ লোকসান ঘটিবে না । ভিতরে আসিয়া দেখিলাম কমললতার কথা মিথ্যা নয়, সেথায় কমলের বনই বটে, কিন্তু দলিত-বিলিত। মত্ত-হস্তিকুলের সাক্ষাৎ মিলিল না, কিন্তু বহু পদচিহ্ন ૭૧