পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ত্রয়োদশ সম্ভার).djvu/৩৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছেলেবেলার গল্প না দিয়ে কুকুরকে দেওয়া। শুনে চুপ করে রইলাম। সংসারে কার দাবী ষে কার কাছে কোথায় গিয়ে পৌঁছায়, সে ওদের আমি বোঝাবে কি দিয়ে । । সে যাই হোক, আমার অতিথিকে ডেকে আনা হলো, আবার সে বারাঙ্গার নীচে উঠনের ধূলোয় পরম নিশ্চিন্তে স্বান করে নিলে। মালী-বোঁয়ের ভয়টা তার গেছে। বেলা যায়, বিকেল হলে উপরের বারান্দা থেকে দেখি অতিথি এই দিকে চেয়ে প্রভত হয়ে দাড়িয়ে ৷ বেড়াতে যাবার সময় হ'ল ষে । আমার শরীর সারলে না, দেওঘর থেকে বিদায় নেবার দিন এসে পড়লো। তৰু দিন-কয়েক দেরি করলাম নানা ছলে । আজ সকাল থেকে জিনিস বাধাবাধি শুরু হ’লো—দুপুরে ট্রেনে। গেটের বাইরে সার সার গাড়ি এসে দাড়ালো, মাল-পত্ৰ বোঝাই দেওয়া চললে । অতিথি মহা ব্যস্ত, কুলিদের সঙ্গে ক্রমাগত ছুটে-দুটি কোরে খবরদারি করতে লাগলো, কোথাও যেন কিছু ক্ষোয় না যায়। তার উৎসাহই সব চেয়ে বেশি । একে একে গাড়িগুলো ছেড়ে দিলে, আমার গাড়িটাও চলতে শুরু করলে। এখানেও এসেছিল ? সে ল্যাজ নেড়ে তার জবাব দিলে,—কি জানি মানে তার কি ! - টিকিট কেনা হলো, মাল-পত্র তোলা হ’লো, বন্ধু এসে খবর দিলেন-ট্রেন ছাড়তে আর এক মিনিট দেরি। সঙ্গে যারা তুলে দিতে এসেছিল তার বকসিস পেলে সবাই, পেল না কেবল অতিথি । গরম বাতাসে খুলে উড়িয়ে সামনেটা আচ্ছন্ন করেছে ; যাবার আগে তারই মধ্যে দিয়ে ঝাপসা দেখতে পেলাম—স্টেশনের ফটকের বাইরে দাড়িয়ে একদৃষ্টে চেয়ে আছে অতিথি । ট্রেন ছেড়ে দিলে, বাড়ি ফিরে বাবার আগ্রহ মনের মধ্যে কোথাও খুজে পেলাম না । কেবলই মনে হতে লাগল অতিথি আজ ফিরে গিয়ে দেখবে বাড়ির লোহার গেট বন্ধ,—ঢোকবার জো নেই। পথে দাড়িয়ে দিন-জুই তার কাটবে, হয়ত নিস্তব্ধ মধ্যাঙ্কের ফাকে লুকিয়ে উপরে উঠে খুজে দেখবে আমার ঘরট,—তার পরে পথের কুকুর পথেই আশ্রয় নেবে। হয়ত, ওর চেয়ে তুচ্ছ জীব সহরে আর নেই, তবু, দেওঘরে বাসের কাটা দিনের স্থতি ওকে মনে করেই লিখে রেখে গেলাম । למלי