সাব-ইন্সপেক্টার। (মুখ টিপিয়া হাসিয়া) যাবার বিলম্ব আছে বুঝি?
ষোড়শী। (মুখ তুলিয়া চাহিয়া ইন্সপেক্টারের প্রতি) আপনারা যান, আমার যেতে এখনো দেরি আছে।
তারাদাস। (উন্মত্তের মত) দেরি আছে! হারামজাদী, তোকে যদি না খুন করি ত মনোহর চক্কোতির ছেলে নই। (লাফাইয়া উঠিয়া ষোড়শীকে আঘাত করিতে গেল।)
ইন্সপেক্টর। (তাহাকে ধরিয়া ফেলিয়া ধমক দিয়া) ফের যদি বাড়াবাড়ি কর ত তোমাকে থানায় ধরে নিয়ে যাব। চল, ভালোমানুষের মত ঘরে চল।
জীবানন্দ। (ইঙ্গিতে ষোড়শীকে আরো একটু কাছে ডাকিয়া) তুমি এঁদের সঙ্গে গেলে না কেন?
ষোড়শী। এঁদের সঙ্গে ত আমি আসিনি।
জীবানন্দ। (কয়েক মুহূর্ত নীরব থাকিয়া) তোমার বিষয়ের ছাড় লিখে দিতে দু’চারদিন দেরি হবে, কিন্তু টাকাটা কি আজই নিয়ে যাবে?
ষোড়শী। তাই দিন।
জীবানন্দ। (বিছানার তলা থেকে একতাড়া নোট বাহির করিল। সেইগুলা গণনা করিতে করিতে ষোড়শীর মুখের প্রতি বার বার চাহিয়া দেখিয়া একটু হাসিয়া বলিল) আমার কিছুতেই লজ্জা করে না, কিন্তু আমারও এগুলো তোমার হাতে তুলে দিতে বাধ বাধ ঠেকচে।
ষোড়শী। (শান্ত নম্র-কণ্ঠে) কিন্তু তাই ত দেবার কথা ছিল।
জীবানন্দ। কথা যাই থাক্ ষোড়শী, আমাকে বাঁচাতে তুমি যা খোয়ালে, তার দাম টাকায় ধার্য্য করচি, এ মনে করার চেয়ে বরঞ্চ আমার না বাঁচাই ছিল ভালো।
ষোড়শী। (তার মুখে স্থিরদৃষ্টে চাহিয়া) কিন্তু মেয়েমানুষের দাম ত আপনি এই দিয়েই চিরদিন ধার্য্য করে এসেছেন। (জীবানন্দ নিরুত্তর—কিছু পরে) বেশ, আজ যদি আপনার সে মত বদলে থাকে, টাকা না হয় রেখেই দিন, আপনাকে কিছুই দিতে হবে না। কিন্তু আমাকে কি সত্যিই এখনো চিনতে পারেননি? ভালো করে চেয়ে দেখুন দিকি?