পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দশম সম্ভার).djvu/৩৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

fकेन-करब्रएकङ्ग बशर्ण-कांहिंनी আমরা ঐইরামকৃষ্ণ সেবাশ্রমে গিয়া উঠিব, এবং সুরেশচন্দ্র একদিন পূর্বে গিয়া তথায় আমাদের বাসের বিলি-ব্যবস্থা সম্পূর্ণ করিয়া রাখবেন। দিল্পী হইতে শ্ৰীবৃন্দাবন বেশী দূর নয়। শুভক্ষণ দেখিয়াই যাত্রা করিয়াছিলাম, কিন্তু পথিমধ্যে আকাশ অন্ধকার করিয়া বৃষ্টি নামিল। মথুরা স্টেশনে নামিতে জিনিসপত্র সমস্ত ভিজিয়া গেল এবং বৃন্দাবনের ছোট গাড়িতে গিম্বা যখন উঠিলাম তখন টিকিট কেনা হইল না। আধ ঘণ্টা পরে সাধের বৃন্দাবনে নামিয়া গাড়ি পাওয়া গেল না, কুলির অত্যধিক দাবী করিল, টিকিট-মাস্টার জরিমানা আদায় করিলেন, একগুণ মোট-ঘাট ভিজিয়া চতুগুণ ভারি হইয়া উঠিল এবং পায়ের জুতা হাতে করিয়া সিক্ত-বস্ত্রে ক্লাস্ত-দেহে যখন সেবাশ্রমের উদ্দেশ্যে যাত্রা করা গেল তখন সন্ধ্যা হয় হয় ; এবং ওয়াকিবহাল এক ব্যক্তিকে আশ্রমের সন্ধান জিজ্ঞাসা করায় সে নিঃসংশয়ে জানাইয়া দিল যে, সে একটা জঙ্গলের মধ্যে ব্যাপার, তথায় যাইবার কোন নির্দিষ্ট রাস্তা নাই এবং দূরত্বও যেমন করিয়া হউক ক্রোশ-দ্বয়ের কম নয়। মন্ট, কা কঁাদ হইয়া উঠিল এবং আমার বাহন ভোলা প্রায় হাল ছাড়িয়া দিল । কিন্তু উপায় কি ? জলের মধ্যে এই পথের ধারেও ত দাড়াইয়া থাকা যায় না ; কোথাও ত্ত যাওয়া চাই, অতএব চলিতেই হইল। বৃষ্টি থামার নাম নাই, প্রভূত রঙ্গ ছিটকাইয়া মাথায় উঠিয়াছে, ঐকণ্টকে পদতল ক্ষত-বিক্ষত, রাত্রি সমাগতপ্রায়, এমনি অবস্থায় দেখা গেল, শ্ৰীমান সুরেশচন্দ্র একটা চালার আবরণ ভেদ করিয়া বাহির হইতেছে। সে একদিন আগে আসিয়াছে, সে সব জানে, তাহার এই প্রকার আকস্মিক অভ্যাগমে আমাদের মধ্যে যেন একটা আনন্দ-কলরব উঠিয়া গেল। অপরাহ্বশেষের স্বল্পালোকে দূর হইতে তাহার চেহারা ভাল দেখা যায় নাই, কিন্তু কাছে আসিলে দেখা গেল, মুখ তাহার ভোলার চেয়ে, এমন কি, মন্টর চেয়েও অধিকতর মলিন। সুরেশ ছেলেটির বয়স কম, কিন্তু এই অল্প বয়সেই সে জ্ঞান লাভ করিয়াছে যে, সংসার দুঃখময়, এখানে প্রফুল্প হইয়া উঠিবার অধিক অবকাশ নাই। সে গম্ভীর ও সংক্ষেপে সংবাদ দিল যে, বৃন্দাবন কলেরায় প্রায় উজাড় হইয়াছে এবং যে দু-চারজন অবশিষ্ট আছে তাহার ডেস্কৃতে শয্যাগত। কাল সে সেবাশ্রমেই ছিল, সেখানে বামুন নাই, চাকর পলাইয়াছে, ব্রহ্মচারীরা সব জরে মর মর। গোটা-সাতেক কুকুর আছে, একটার ল্যাঙ্গে স্বা, একটা মস্ত রামছাগল আছে তার নাম রামভকং, সে রাজ্যগুদ্ধ লোককে গুতাইয়া বেড়ায়। সেবাশ্রমের স্বামিজী বেদানন্দ শুধু ভাল আছেন, আজ তিনি রাধিয়াছেন এবং সুরেশ নিজে বাসন মাজিয়াছে। গরম চায়ের আশা ত মুদূরপরাহত, রাত্রে দুটাে ভাত পাওয়াই শক্ত। পাশে চাহিয়া দেখিলাম e42