পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বাদশ সম্ভার).djvu/১৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শের্যের পরিচয় বেীতে অধিষ্ঠিত হওয়ার বাধা নাই, বাধা রেণুর ঠাকুর-ঘরে প্রবেশের এবং ঠাকুরের ভোগ রন্ধনের । * মুখে যাহাই বলুন না কেন, এই ঘটনায় ব্ৰজবাবু যাথার্থই মৰ্ম্মাহত হইলেন। র্তাহার সমস্ত জীবনের প্রধান লক্ষ্য, পরম প্রিয়তম গোবিন্দজীউ নিজ পূজামশিরে প্রবেশ করিতে পারিলেন না, বৈঠকখানা-বাড়িতে পড়িয়া রছিলেন, এই ক্ষোভে ও দুঃখে ব্ৰজবাবু মুহমান হইয়া পড়িলেন। সংসারে নানা বিপৰ্য্যয় এমন কি সৰ্ব্বস্বাস্ত গৃহহারা অবস্থাও তাহার অন্তরকে এমন রিক্ত করিতে পারে নাই । গ্রামে আসিয়া পৰ্য্যস্ত রেণুর মোটে অবকাশ রহিল না। গোবিন্দজীর সেবা এবং পিতার যত্ব ও শুশ্ৰষ লইয়া তাহাকে সৰ্ব্বদা ব্যস্ত থাকিতে হয়। অন্য কোনও ব্যাপারে তাহার দৃষ্টি দিবার সময় বিরল, হয়তো ইচ্ছাও নাই । সদরবাটীর দুইখানি ঘরের একখানি গোবিন্দঙ্গাউর জন্য, অন্যথানি পিতার জন্য সে নির্দিষ্ট করিয়া লইয়াছে। পিতার শয়নগৃহেরই একপ্রান্তে একখানি সরু তক্তাপোষে নিজের শয়নের ব্যবস্থা করিয়াছে। ছোট ছোট দুখানি কক্ষের একখানি ভাণ্ডার এবং অপরধানি রন্ধনকক্ষ হইয়াছে। উঠানের এককোণে একটুখানি জায়গা বেড়া দিয়া বিরিয়া রেণু স্নানের স্থান নির্দিষ্ট করিয়া লইয়াছে। ব্ৰজবাবু ব্যাকুলচিত্তে চিন্তা করেন -গোবিন্দ, তোমাকে তোমার আপন মন্দির থেকে বাইরে এনে অসম্মানের মধ্যে ফেলে রাখলাম শেষকালে ! এ কি আমার উচিত হ’লে প্রভু ? কিন্তু আমার রেণুর যে তুমি ছাড়া আর কেউ নেই। তাকে তোমার সেবায় বঞ্চিত করলে সে কি নিয়ে বেঁচে থাকবে ? পতিতপাবন, তুমিও কি অবশেষে অীমাদের সাথে পতিত সেজে রইলে ? সন্ধ্যারতির ক্ষণে আরতি করিতে করিতে ব্ৰজবাৰু আত্ম-বিশ্বত হইরা পড়েন, এই ধরণের ভাবনার। দক্ষিণ হাতের পঞ্চপ্রদীপ, বাম হাতের ঘণ্ট। নিশ্চল হইয়া যায়। গও বাহিয়া অশ্র গড়াইয়া পড়ে, খেয়াল থাকে না। রেণু ডাকে, বাবাব্ৰজবাবুর চমক ভাঙ্গে। সলঙ্গে ত্ৰস্ত-হস্তে আবার আরন্ধ আরতিতে পুনঃপ্রবৃত্ত হন। কখনও বা সংশয়-উদ্বেল চিত্তে ভাবেন---গোবিন্দ, সন্তানস্নেহে অন্ধ হয়ে তোমার প্রতি ক্রটি করে প্রত্যবায়ভাগী হলাম না তো প্রভু ? এইরূপ অত্যধিক মানসিক সংঘাতে ব্ৰজবাবু যখন বিপৰ্যন্ত-চিত্ত, সেই সময়ে ঘটিল এক দুর্ঘটনা। দ্বিপ্রহরে একদিন পূজার ঘর হইতে বাহির হইয়া ব্ৰজবাৰু মাথা ঘুরিদ। পড়িয়া মৃতিপ্রায় হইলেন। রেঞ্চ ভয়ে ও উদ্বেগে কাতর হইলেও স্বভাবগত ধীরতার tyతి