পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (দ্বাদশ সম্ভার).djvu/১৯৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষেৰ পৰিচয় করলাম, বিধাতার কাছে পৰ্যন্ত জানালাম না অভিযোগ, সে-বোনা কি কোনদিন দর হবে আমার অর্থ মান যশ বা কৰ্মজীবনের চরিতার্থতা দিয়ে ? সমস্ত প্রাণ যেন হা হা করে ওঠে, মুশড়ে পড়ে যা-কিছু কর্মের উৎসাহ আকাঙ্ক্ষার উদ্দীপনা। মনে হয়েচে, অদৃষ্ট দেবতা যে মানুষকে পৃথিবীতে পাঠিয়ে শৈশবেই করেচেন মাতৃস্নেহে বঞ্চিত, সে যে কতবড় কুর্তাগ্য নিয়ে মানুষের হাটে এসেচে, সে কথা কাউকে বুঝিয়ে বলবার অপেক্ষা করে না । জীবজগতের স্রষ্টার সর্বশ্লেষ্ঠ দান মাতৃস্নেহ, সেই স্নেহেই যে আজীবন বঞ্চিত, তার আর—বেদনার আবেগে তারকের কণ্ঠ অবরুদ্ধ হইয়া আসিল । সবিতার চোখের কোণ সজল হইয়া উঠিয়াছিল। তিনি কিছুই বলিলেন না, সানাও দিলেন না। মুখে মুস্পষ্ট হইয়া উঠিল সহানুভূতির ছায়া। ষে নিবিড় বেদন তিনি নিঃশবে অতি সঙ্গোপনে অন্তরের নিভৃতে একাকী বহন করিয়া আসিতেছেন, সুদীর্ঘকাল ব্যাপিয়া উাহার সেই বেদনাস্থানই তারক করিয়াছে আজ অজ্ঞাতে স্পর্শ । তারকের শেষের কথা-কয়টি সবিতার সমগ্র অন্তর আলোড়িত করিয়া তুলিয়াছিল। নিঃশবো নত-নয়নে তিনি নিজের অশান্ত হৃদয়াবেগ সংযত করিতে লাগিলেন । সদর দরজায় পিওন হাকিল—চিঠি— তারক বাহিরে গিয়া পত্র লইয়া আসিল । সবিতার নামে চিঠি। সারদা লিথিয়াছে। সংবাদ দিয়াছে, বিমলবাবুর সহিত রাজুর দেখা হইয়াছিল রাস্তায় । তাছার মুখে বিমলবাবু সংবাদ পাইয়াছেন—দেশে কস্তাসহ ব্ৰজবাৰু কুশলেই আছেন। সবিতা পত্র পাঠ করিয়া হাসিয়া বলিলেন, রাজু বোধহয় সারদার সঙ্গে দেখা করতে আসে না। আসবেই বা কি করে, সে হয়তো জানেই না সারদা হরিণপুরে আসেনি। তারক কথা কছিল না । সবিতা আবার বলিলেন, দেখি, আমিই না হয় তাকে একখানা চিঠি লিখে দিই। এক কাজ করে না তারক, তুমি তাকে এখানে আসবার নিমন্ত্রণ করে চিঠি লেখে, আমিও তার সঙ্গে লিখে দেবো এখানে আসতে। এখানে সে এলে তোমাদের ছুই বন্ধুর মান-অভিমানের মীমাংসা হয়ে যাবে। তারক বলিল, বেশ তো । আমি লিখে দিচ্চি আজই। সবিতা স্নেহস্নিগ্ধ-কণ্ঠে কছিলেন, রাজু আমার বড় অভিমানী ছেলে। কিন্তু তার অন্তরের তুলনা কোথাও দেখলাম না। কথাটা সবিতা বলিলেন এমনই সহজভাবেই, কিন্তু তারকের চিত্তে ইহা অস্ত অর্থে ومياج