পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/১০৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শেষ প্রশ্ন কমল কহিল, তা ত জানিনে—তিনিও এ-কথা বলেন। এবার অবিনাশ আত্মবিশ্বত হইলেন। বিদ্রুপে মুখ কালো করিয়া বলিলেন, খুব জান ! কথাগুলো মুখস্থ করেচ, আর জান না করি ? তাহার এই কদৰ্য্য দৃঢ়তার জবাব কমল দিল না, দিল নীলিমা । কহিল, কথা যারই হোক মুখুয্যেমশায়, মাষ্টারিগিরি কাজে কড়া কথায় ধমক দিয়ে ছাত্রের মুখ বন্ধ করা যায়, কিন্তু তাতে সমস্তার সমাধান হয় না। প্রশ্নের জবাব না দিতে পারলে ত লজ্জা নেই, কিন্তু ভদ্রতা লঙ্ঘন করায় লজ্জা আছে। কিন্তু ঠাকুরপো, একটা গাড়ী ডাকতে পাঠাও না ভাই। তোমাকে কিন্তু গিয়ে পৌছে দিতে হবে । তুমি ব্রহ্মচারী মানুষ, তোমাকে সঙ্গে দিতে ত আর ভয় নেই। এই বলিয়া সে কটাক্ষে অবিনাশের প্রতি চাহিয়া বলিল, মুখুয্যেমশায়ের মুখের চেহার যে-রকম মিষ্টি হয়ে উঠেচে—তাতে বিলম্ব করা আর সঙ্গত হবে না । অবিনাশ গম্ভীর হইয়া কহিলেন, বেশ ত, তোমরা বসে গল্প কর না, আমি শুতে চললাম। বলিয়া উঠিয়া গেলেন। চাকর গাড়ী ডাকিতে গিয়াছিল, হরেন্দ্র কমলকে উদ্দেশ করিয়া বলিল, আমার আশ্রমে কিন্তু একদিন যেতে হবে। সেদিন আনতে গেলে কিন্তু না বলত্তে পারবেন না । কমল সহাস্তে কহিল, ব্রহ্মচারীদের আশ্রমে আমাকে কেন হরেনবাবু ? নাই বা গেলাম ? না, সে হবে না। ব্রহ্মচারী বলে আমরা ভয়ানক কিছু নই । নিতান্তই শাদাসিধে। গেরুয়াও পরিনে, জটা-বন্ধলও ধারণ করিনি। সাধারণের মাঝখানে আমরা তাদের সঙ্গেই মিশে আছি। কিন্তু সে ত ভাল নয় । অসাধারণ হয়েও সাধারণের মধ্যে আত্মগোপনের চেষ্টা আর একরকমের অন্যায় আচরণ। বোধ হয় অবিনাশবাবু একেই বলেছিলেন ভণ্ডামি । তার চেয়ে বরং জটা-বন্ধল গেরুয়া ঢের ভাল । তাতে মানুষকে চেনবার সুবিধে হয়, ঠকবার সম্ভাবনা কম থাকে। হরেন্দ্র কহিল, আপনার সঙ্গে তর্কে পারবার যে নেই—হটতেই হবে। কিন্তু বাস্তবিক, আমাদের প্রতিষ্ঠানটিকে আপনি কি ভাল বলেন না ? পারি অার না পারি, এই আদর্শ কত বড় ! কমল কছিল, তা বলতে পারব মা হরেনবাবু। সমস্ত সংযমের মত যৌন-সংঘমেও সত্য আছে। কিন্তু সে গৌণ সত্য । বট করে তাঁকে জীবনের মুখ্য সত্য করে వివి a=్ఫలి