শেষ প্রশ্ন কমল অতি বিস্ময়ে নিৰ্ব্বাক্ হইয়া রহিল। রাজেন বলিতে লাগিল, আমাদের সে নীতি নয়, মিথ্যে শ্রদ্ধা দিয়ে আমরা সংসারের সর্বনাশ করিনে—বন্ধুর হলেও না— তাকে ভেঙে গুড়িয়ে দিই। এই আমাদের কাজ । কমল কহিল, একেই তোমরা কাজ বল ? 駛 রাজেন কহিল, বলি। কি হবে আমার মনের মিল নিয়ে, মতের অমিলে বাধা যদি আমার কৰ্ম্মকে প্রতিহত করে? আমরা চাই মতের ঐক্য, কাজের ঐক্য—ও ভাববিলাসের মূল্য আমাদের কাছে নেই শিবানি— কমল আশ্চৰ্য্য হইয়া কহিল, আমার এ নামটাও তুমি শুনেচ ? শুনেচি। কৰ্ম্মের জগতে মামুষের ব্যবহারের মিলটাই বড়, হৃদয় নয়। হৃদয় থাকে থাক, অস্তরের বিচার অন্তর্যামী করুন, আমাদের ব্যবহারিক ঐক্য নইলে চলে না। ওই আমাদের কষ্টিপাথর—ঐ দিয়ে যাচাই করে নিই। কই, দুজনের মনের মিল দিয়ে ত সঙ্গীত স্বষ্টি হয় না, বাইরে তাদের মুরের মিল না যদি থাকে। সে শুধু কোলাহল । রাজার যে সৈন্যদল যুদ্ধ করে, তাদের বাইরের শক্তিটাই রাজার শক্তি, হৃদয় নিয়ে তার গরজ নেই। নিয়মের শাসন সংযম—এই আমাদের নীতি। একে থাটো করলে হৃদয়ের নেশার খোরাক যোগানো হয়। সে উচ্ছ জ্বলতারই নামান্তর – গাড়োয়ান, রোকো রোকো—শিবানি, এই তার বাসা । সম্মুখে জীর্ণ প্রাচীন গৃহ। উভয়ে নিঃশবো নামিয়া আসিয়া নীচের একটা ঘরে প্রবেশ করিল। পদশব্দে শিবনাথ চোখ মেলিযt চাহিল, কিন্তু দীপের স্বল্পালোকে বোধ হয় চিনিতে পারিল না । মুহূৰ্ত্ত পরেই চোখ বুজিয়া তন্দ্রাচ্ছন্ন হইয়া পড়িল ।
- ><!
চারিদিকে চাহিয়া কমল স্তব্ধ হইয়া রহিল। ঘরের এ কি চেহারা । এখানে যে মানুষ বাস করিয়া আছে সহজে প্রত্যয় হয় না। লোকের সাড়া পাইয়া সতেরো-আঠারো বছরের একটি হিন্দুস্থানী ছোকরা আসিয়া দাড়াইল ; রাজেন তাহার পরিচয় দিয়া কহিল, এইটি শিবানাথবাবুর চাকর। পথ্য তৈরি করা থেকে ওষুধ খাওয়ানো পৰ্য্যন্ত এরই ডিউটি। স্বৰ্য্যাস্ত হতেই বোধ করি ঘুমোতে মুরু করেছিল, এখন উঠে আসচে। Y&N)
