পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/৩০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বামী মামা পাজ দেখতে যাত্রা করলেন। যাবার সময় কতই না ঠাট্ৰা-তামাসা করে গেলেন। মা মুখ চূণ করে দাড়িয়ে রইলেন, মনে মনে বেশ বুঝলেন, এ যাওয়৷ পণ্ডশ্রম। পাত্র তার কিছুতেই পছন্ম হবে না। 劇 কিন্তু আশ্চৰ্য্য, ফিরে এসে আর বড় ঠাট্টা-বিন্দ্রপ করলেন না । বললেন, ইl, ছেলেট পাশ-টাশ তেমন কিছু করতে পারেনি বটে, কিন্তু মুখু বলেও মনে হ’ল না। তা ছাড়া নম্র, বড় বিনয়ী। আর একটা কি জানিস গিরি, ছেলেটির মুখের ভাবে কি-একটু আছে ; ইচ্ছে হয় বসে বসে আরও দু’দও আলাপ করি। মা আহলাদে মুখখানি উজ্জল করে বললেন, তবে আর আপত্তি ক’রো না দাদা, মত দাও--সন্ধুর একটা কিনারা হয়ে যাক । মামা বললেন, আচ্ছা, ভেবে দেখি । আমি আড়ালে দাড়িয়ে নিরাশার আশাটুকু বুকে চেপে ধরে মনে মনে বললুম, যাক, মামা এখনো মনস্থির করতে পারেননি। এখনও বলা যায় না। কিন্তু কে জানত, র্তার ভাগীর বিয়ের সম্বন্ধে মতিস্থির করবার পূর্বেই তার নিজের সম্বন্ধে মতিস্থির করবার ডাক এসে পড়বে। র্যাকে সারাজীবন সন্দেহ করে এসেচেন, সেদিন অত্যন্ত অকস্মাৎ র্তার দূত এসে যখন একেবারে মামার শিয়রে দাড়াল, তখন তিনি চমকে গেলেন। র্তার কথা শুনে আমাদেরও বড় কম চমক লাগল না । মাকে কাছে ডেকে বললেন, আমি মত দিয়ে যাচ্ছি বোন, সদুর সেইখানেই বিয়ে দিস। ছেলেটির যথার্থ ভগবানে বিশ্বাস আছে। মেয়েটা সুখে থাকবে। অবাক্ কাও ! কিন্তু অবাক্ হলেন না শুধু মা। নাস্তিকতা তিনি দু’চক্ষে দেখতে পারতেন না। তার ধারণা ছিল, . মরণকালে সবাই ঘুরে-ফিরে হরি বলে। তাই তিনি বলতেন, মাতাল তার মাতাল বন্ধুকে যত ভালই বাস্থক না কেন, নির্ভর করবার বেলায় করে শুধু তাকে যে মদ খায় না । জানি না, কথাটা কতখানি সত্যি। হৃদরোগে মামা মারা গেলেন, আমরা পড়লুম অকুল-পাথারে। মুখে দুঃখে কিছুদিন কেটে গেল বটে, কিন্তু যে-বাড়িতে অবিবাহিতা মেয়ের বয়স পোনর পার হয়ে যায়, সেখানে আলস্যভরে শোক করবার সুবিধা থাকে না । মা চোখ মুছে উঠে বসে আবার কোমর বেঁধে লাগলেন। অবশেষে অনেকদিন অনেক কথা-কাটাকাটির পর, বিবাহের লগ্ন যখন সত্যিই আমার বুকে এসে বিধল, তখন বয়সও ষোল পার হয়ে গেল। তখনও আমি প্রায় এমনিই লম্বা। আমার এই দীর্ঘ দেহটার জন্য জননীর লজ্জা ও কুষ্ঠার অবধি ছিল না। রাগ করে প্রায়ই ভৎসনা করতেন, হতভাগ্য মেয়েটার সবই স্বষ্টিছাড়া। একে శిన్గళి