পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ একটু নাড়িয়া, কেহ সেটুকু করিবারও ফুরসৎ পাইলেন না । কমল ও শিবনাথ, ইহারাও মুখ ভুলিয়া দেখিল। কিন্তু আশ্চৰ্য্য এই যে, একজনের চোখের দৃষ্টি যেমন শিখার মত জলিতেছে, অপরের চোখের দৃষ্টি তেমনিই ক্লান্ত ও মলিন ; সে যেন কিছুই দেখিতেছে না, কিছুই শুনিতেছে না । এই দলের মধ্যে থাকিয়াও শিবনাথ কোথায় কত দূরেই যেন চলিয়া গেছে। আপ্তবাবু শুধু বলিলেন, বসে। কিন্তু তাহার কোথায় বসিল, কিংবা বসিল কি না সে দেখিবার সময় পাইলেন না । অবিনাশ বোধ করি অক্ষয়ের যুক্তিমালার ছিন্ন স্বত্রটাই হাতে জড়াইয়া লইয়াছিলেন; বলিলেন, সম্রাট সাজাহানের প্রসঙ্গ এখন থাক, তার সম্বন্ধে চিস্ত করে দেখবার হেতু আছে স্বীকার করি, প্রশ্নটা একটু জটিল। কিন্তু প্রশ্ন যেখানে ঐ স্বমুখের মাৰ্ব্বেলের মত সাদা, জলের ন্যায় তরল, স্বৰ্য্যের আলোর মত স্বচ্ছ এবং সোজা—এই যেমন আমাদের আগুবাবুর জীবন—কোনদিকে অভাব কিছু ছিল না, আত্মীয়-স্বজন বন্ধুবান্ধবের চেষ্টার ক্রটি ছিল না—জানি ত সব, কিন্তু একথা উনি ভাবতে পারলেন না র্তার মৃত স্ত্রীর জায়গায় আর কাউকে এনে বসান যায় কিরূপে । এ বস্তু তার কল্পনারও অতীত। বল ত, নর-নারীর প্রেমের ব্যাপারে এ কতবড় আদর্শ! কত উচুতে এর স্থান । কমল কি একটা বলিতে যাইতেছিল, কিন্তু পিছনের দিকে একটা মৃদু-স্পর্শ অনুভব করিয়া ফিরিয়া চাহিল। শিবনাথ কহিলেন, এখন এ আলোচনা থাক । কমল জিজ্ঞাসা করিল, কেন ? শিবনাথ উত্তরে শুধু বলিল, এমনিই বলছিলাম। এই বলিয়া চুপ করিল। তাহার কথায় বিশেষ কেহ মনোযোগ করিল না—সেই উদাস অল্পমনস্ক চোখের অন্তরালে কি কথা যে চাপা রহিল কেহ তাহ জানিল নী, জানিবার চেষ্টাও করিল না। কমল কহিল, ও—এমনিই । তোমার বাড়ি যাবার তাড়া পড়েচে বুঝি ? কিন্তু বাড়িটি ত সঙ্গেই আছেন। এই বলিয়া সে হাসিল। আগুবাবু লজ্জা পাইলেন, হরেন্দ্র-অক্ষয় মুখ টিপিয়া হাসিল, মনোরম অন্যদিকে চকু ফিরাইল, কিন্তু বাহাকে লক্ষ্য করিয়া বলা হইল সেই শিবনাথের আশ্চর্ঘ্য সুন্দর মুখের উপরে একটি রেখারও পরিবর্তন হইল না—সে যেন একেবারে পাথরে গড়, যেন দেখিতেও প্রায় না, শুনিতেওঁ পায় না। অবিনাশের দেরি পল্লিতে ছিল না, বলিলেন, আমার প্রশ্নের জবাব দাও । কমল কছিল, কিন্তু স্বামীর নিষেধ যে ! মৰ্তার অবাধ্য হওয়া কি উচিত ? এই বলিয়া সে "לא