পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (নবম সম্ভার).djvu/৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* শরৎসাহিত্য-সংগ্ৰহ এখানে এভাবে দর্শন মিলিতে পারে তাহ তাহদের কল্পনার অতীত। হয়েজ হাত জুলিয়া কমলকে নমস্কার করিয়া কহিল, ভাল আছেন? অনেকদিন আপনাকে দেখিনি । , অবিনাশ হাসিবার মত মুখভঙ্গী করিয়া একবার দক্ষিণে ও একবার বায়ে ঘাড় নাড়িলেন—তাহার কোন অর্থ-ই নাই । আর সোজা মানুষ অক্ষয় । তিনি সোজ পথে সোজা মতলবে কাঠের মত ক্ষণকাল সোজা দাড়াইয়া দুই চক্ষে অবজ্ঞা ও বিরক্তি বর্ণনা করিয়া একখানা চেয়ার টানিয়া বসিয়া পড়িলেন। আগুবাবুকে জিজ্ঞাসা করিলেন, আর্টকেলটা পড়লেন ? বলিয়াই তার নজরে পড়িল সেই লেখাটা মাটিতে পুষ্টাইতেছে। নিজেই তুলিতে যাইতেছিলেন, হরেন্দ্র বাধা দিয়া কহিল, খাক না অক্ষয়বাবু, বাট দেবার সময় চাৰুরটা ফেলে দেবে অখন। তাহার হাতটা ঠেলিয়া অক্ষয় কাগজগুলা কুড়াইয়া আনিলেন । ই, পড়লাম, বলিয়া আগুবাবু উঠিয়া বসিলেন। চাহিয়া দেখিলেন, অজিত ওধারের সোফায় বসিয়া সেইদিনের খবরের কাগজটায় চোখ বুলাইতে স্বরু করিয়াছে। অবিনাশ কিছু একটা বলিতে পাইয়া নিঃশ্বাস ফেলিয়া বঁচিলেন, কহিলেন, আমিও অক্ষয়ের লেখাটা আগাগোড়া মন দিয়ে পড়েচি আপ্তবাবু। ওর অধিকাংশ সত্য এবং মূল্যবান। দেশের সামাজিক ব্যবস্থার যদি সংস্কার করতেই হয় ত সুপরিচিত এবং সুপ্রতিষ্ঠিত পথেই তাদের চালনা করা কর্তব্য। স্কুরোপের সংস্পর্শে আমরা অনেক ভাল জিনিস পেয়েচি, নিজেদের বহু ক্রাট জামাদের চোখে পড়েচে মানি, কিন্তু আমাদের সংস্কার আমাদের নিজের পথেই হওয়া চাই। পরের অনুকরণের মধ্যে কল্যাণ নেই। ভারতীয় নারীর যা বিশিষ্টতা, যা তাদের নিজস্ব, সে থেকে যদি লোভ বা মোহের বশে তাদের নষ্ট করি, আমরা সকল দিক দিয়েই ব্যর্থ হব। এই না অক্ষয়বাৰু ? কথাগুলি ভালো এবং সমস্তই অক্ষয়বাবুর প্রবন্ধের। বিনয়বশে তিনি মুখে কিছুই বলিলেন না, শুধু আত্মপ্রসাদের অনিৰ্ব্বচনীয় তৃপ্তিতে অর্ধনিমীলিত নেত্রে বার-কয়েক শিরশচালন করিলেন। আপ্তবাবু অকপটে স্বীকার করিয়া কহিলেন, এ নিয়ে তর্ক নেই অবিনাশবাৰু। বহু মনীষী বহুদিন থেকে এ-কথা বলে আসচেন এবং বোধ হয় ভারতবর্ষের কোন লোকই এর প্রতিবাদ করেন না। s অক্ষয়বাৰু বলিলেন, করবার যে নেই এবং এ-ছাড়া আরও অনেক বিষয় আছে যা প্রবন্ধে লিখিনি, কিন্তু কাল নারী-কল্যাণ সমিতিতে আমি বক্তৃতায় বলব। - 伊●