পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (পঞ্চম সম্ভার).djvu/২২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ গিরীন বলিল, দিদির কাছে শুনেচি, নবীনবাবুর খুব বেশি স্বদ। তাই বলি, জামার অনেক টাকাই ত অমনি পড়ে রয়েছে, কোনও কাজেই আসে না, আর, তারও দরকার, না হয় এই ঋণটা শোধ করে দিন না ? ললিতা ও গুরুচরণ উভয়েই আশ্চৰ্য্য হইয় তাহার দিকে চাহিয়া রহিলেন । গিরীন অত্যন্ত সঙ্কোচের সহিত বলিতে লাগিল, আমার এখন ত টাকার বিশেষ কোন আবশ্বকই নাই, তাই যখন আপনার সুবিধা হবে ফিরিয়ে দিলেই চলবে, ওঁদের আবশ্বক, সেইজন্যে বলেছিলাম, যদি— গুরুচরণ ধীরে ধীরে বলিলেন, সমস্ত টাকাটা তুমি দেবে ? গিরীন মুখ নীচু করিয়া বলিল, বেশ ত, তাদের উপকার হয়— গুরুচরণ প্রত্যুত্তরে কি একটা বলিতে যাইতেছিলেন, ঠিক এই সময়ে আন্নাকালী ছুটিয়া আসিয়া পড়িল। সেজদি, জলদি শেখরদা কাপড় পরে নিতে বললেন— থিয়েটার দেখতে যেতে হবে,—বলিয়াই যেমন করিয়া আসিয়াছিল তেমনি করিয়াই চলিয়া গেল। তাহার ব্যগ্রতা দেখিয়া গুরুচরণ হাসিলেন। ললিত স্থির হুইয়া ब्रश्लि । আরাকালী মুহূর্ত পরেই ফিরিয়া আসিয়া বলিল, কৈ, উঠলে না সেজদি, সবাই দাড়িয়ে রয়েচি যে ! তথাপি ললিত উঠিবার কোন লক্ষণ প্রকাশ করিল না। সে শেষ পর্য্যন্ত শুনিয়া যাইতে চায়, কিন্তু গুরুচরণ কালীর মুখের দিকে চাহিয়া একটুখানি হাসিয়া ললিতার মাথায় একটা হাত দিয়া বলিলেন, তাহলে যা মা, দেরি করিসনে—তোর জন্তে বুঝি সবাই অপেক্ষা করে আছে। অগত্যা ললিতাকে উঠতে হইল। কিন্তু যাইবার পূৰ্ব্বে গিরীনের মুখের পানে সে যে গভীর কৃতজ্ঞ দৃষ্টি নিক্ষেপ করিয়া ধীরে ধীরে বাহির হইয়া গেল, গিরীন তাহ দেখিতে পাইল । মিনিট-দশেক পরে কাপড় পরিয়া প্রস্তুত হইয়া সে পান দিবার ছুত করিয়া আর একবার বাহিরের ঘরে নিঃশব্দ-পদক্ষেপে আসিয়া প্রবেশ করিল। গিরীন চলিয়া গিয়াছে। একাকী গুরুচরণ মোট বালিশট মাথায় দিয়া চোখ বুজিয়া গুইয়া আছেন, তাহার মুদ্রিত চক্ষুর দুই পাশ বাহিয়া জল ঝরিতেছে। এ যে আনন্দাশ্ৰ, ললিতা তাহা বুঝিল। বুঝিল বলিয়াই তাহার ধ্যান ভাঙিয়া দিল না, যেমন নিঃশব্দে প্রবেশ করিয়াছিল, তেমনি নিঃশব্দে বাহির হইয়া গেল। অনতিকাল পরে সে যখন শেখরের ঘরে আসিয়া উপস্থিত হইল, তখন তাহার રરે જ