পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (পঞ্চম সম্ভার).djvu/২৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দর্পচূর্ণ আজ তাই বুঝি সেখানে টাকা পাঠিয়ে দিলে ? নরেন্দ্র অধিকতর লজ্জিত হইয়া পড়িল কহিল, কিছুই ত তার হাতে ছিল না —বাড়ির পাশেই একটা মেলা বসেচে লিখেচেন, সেটা শেষ হয়ে গেলেই ফিরতে পারবেন—তোমাকে বুঝি চিঠিপত্র লিখতে পারেন নি ? পেরেচেন বৈ-কি ? কাল আমিও একখানা চারপাতী-জোড়া চিঠি পেয়েচি– পেয়েচিস্ ? পাবি বৈ কি—তার জবাবটা— তোমার ভয় নেই দাদা—তোমার অস্বথের কথা লিখবো না। আমার নষ্ট করবার মত অত সময় নেই । বলিয়া বিমলা ঘর ছাড়িয়া চলিয়া গেল । সন্ধ্যার প্রাক্কালে খোলা জানালার ভিতর দিয়া লাল আকাশের পানে চাহিয়া নরেন্দ্র স্তব্ধভাবে বসিয়া ছিল, বিমলা ঘরে ঢুকিয়া বলিল, চুপ করে কি ভাবচ দাদা ? নরেন্দ্র মুখ ফিরাইয়া লইয়া বলিল, কিছুই ভাবিনি বোন, মনে মনে তোকে আশীৰ্ব্বাদ করছিলুম, যেন এমনি মুখেই তোর চিরদিন কাটে। বিমলা কাছে আসিয়া তাহার পায়ের ধূলা মাথায় লইয়া একটা চৌকির উপর বসিল । আচ্ছা, দুপুরবেলা অত রাগ করে চলে গেলি কেন বল ত ? আমি অন্যায় সইতে পারিনে ? কেন তুমি অত— অত কি বল ? ইন্দুর দিক থেকে একবার চেয়ে দেখ, দেখি ? আমি ত তাকে মুখে রাখতে পারিনি ? মুখে থাকতে পারায় ক্ষমতা থাকা চাই দাদা । সে যা পেয়েচে, এত কজন পায় ? কিন্তু সৌভাগ্যকে মাথায় তুলে নিতে হয় ; নইলে—কথাটা শেষ করিবায় পূর্বেই বিমল লজ্জায় মাথা হেঁট করিল। নরেন্দ্র নীরবে স্নিগ্ধ-সস্নেহ দৃষ্টিতে এই ভগিনীর সর্বাঙ্গ অভিষিক্ত করিয়া দিয়া, ক্ষণকাল পরে কহিল, বিমলা, লজ্জা করিস্নে দিদি, সত্য বলত, তুই কখনো ঝগড়া করিস্নে ? উনি বলেচেন বুঝি ? তা ত বলবেনই। নরেন্দ্র মৃদু হাসিয়া বলিল, না, গগনবাবু কিছু বলেননি—আমি তোকেই জিজ্ঞাসা করচি । বিমলা আরক্ত মুখ তুলিয়া বলিল, তোমাদের সঙ্গে ঝগড়া করে কে পারবে বল ? শেষে হাতে-পায়ে পড়ে— ওখানে দাড়িয়ে কে ? আমি, আমি—গগনবাবু থামলে কেন—বলে যাও। ঝগড়া করে কার হাতেপায়ে কাকে পড়তে হয়—কথাটা শেষ করে ফেল । - যাও—যে সাধু-পুরুষ লুকিয়ে শোনে, তার কথার আমি জবাব দিইনে । Sఆd e8اس ہی ه