পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (পঞ্চম সম্ভার).djvu/২৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Cन्वांन्यु প্রথম পরিচ্ছেদ বিবাহ সাগরপুরে আজ মহাধুম, রক্ষনচৌকি আর ঢাকের বাদ্যে গ্রাম সরগরম। সপ্তাহ ধরিয়া যে কি কাণ্ড বাধিয়া গিয়াছে, তাহা গ্রামের এবং তৎপার্শ্ববর্তী চারি-পাচ ক্রোশের সকল লোক জানে। এ রাজস্থয়-যজ্ঞে ঢাক-ঢোলের এমন মহান একত্র সমাবেশ, সানাই-দলের এমন আদর্শ ঐক্যভাব, কাংস্ত-নিৰ্ম্মিত বাদ্য-যন্ত্রের এমন প্রচণ্ড বিক্রম দেখা গিয়াছিল যে, গ্রামের লোক ইতিপূৰ্ব্বে এমন কাও কখনও আর দেখে নাই। রং-বেরং বাদ্য-যন্ত্রের সাহায্যে মনুষ্যশ্রেণীর যে আনন্দ-কোলাহল উখিত হইয়াছে, তাহাতে গ্রামের পশুগুলা অত্যন্ত বিরক্ত হইয়া উঠিয়াছে, বিশেষ গরু-বাছুরের দল, ঢাক-ঢোলের আত্মদ্রোহিতায় তাহাদের মৰ্ম্মপীড়ার আর সীমা নাই। এত সমারোহের কায়ণ, একটা নাবালক চতুর্দশবর্ষীয় বালকের বিবাহ। সাগরপুরের জমিদার শযুক্ত হরদেব মিত্রের একমাত্র পুত্রের বিবাহ উপলক্ষ্য করিয়াই এমন কাণ্ড বাধিয়া গিয়াছে। হরদেব মিত্র বেশ বড়লোক, প্রায় পঁচিশ-ছাব্বিশ হাজার টাকা তাহার বাৎসরিক আয় । পাত্রের নাম শ্ৰীযুক্ত সত্যেন্দ্রকুমার মিত্র, হেয়ার সাহেবের স্কুলে এণ্ট,ান্স ক্লাশে সে পড়ে। আত অল্প বয়সে বিবাহের কারণ, একমাত্ৰ সত্যেন্দ্রর মাতার বধু-মুখ দেখিবার একান্ত সাধ । বৰ্দ্ধমান জেলার দিলজানপুয়ের জমিদার শ্ৰীযুক্ত কামাখ্যাচরণ চৌধুরীর কনিষ্ঠ কন্য সরলার সহিত সত্যেন্দ্রের বিবাহ হইয়া গেল । রাঙ্গা বেী ! সত্যেন্দ্র মহামুখী । দশ বছরের টুকটুকে ছোট বউটয় মুখ দেখিয়া সত্যেন্দ্রর জননী বিশেষ হৃষ্টচিত্ত হইলেন। বিবাহের পরবৎসরেই হরদেববাবু বধু আনিলেন, কারণ গৃহিণীর এরূপ অভিসন্ধি ছিল না যে, বধূকে পিতৃগৃহে রাখিয়া দেন। তিনি প্রায় বলিতেন, বিবাহ হইলে মেয়েকে মার বাপের বাটতে রাখিতে নাই ; মতটা মন্দ নহে। সত্যেন্দ্রের পাঠের মুবিধার জন্য হরদেববাবুকে সস্ত্রীক কলিকাতাতেই থাকিতে হইত, সরলা কলিকাতায় আসিল । অল্প-বয়সে বিবাহ হইয়াছিল বলিয়া সরলা হরদেববাবুর সহিত কথা কহিত, এমন কি সত্যেন্ত্ৰ উপস্থিত থাকিলেও সে শ্বশ্র-ঠাকুরাণীর সহিত কথা বলিত, গৃহিণীর তাহাতে মুখ ভিন্ন অমুখ ছিল না। दे***

    • -७१