পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (প্রথম সম্ভার).djvu/৩৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চন্দ্রনাথ কিছুই নেই ? কোন শঙ্কা হয় না ? কিছু না, বাবাজী, কিছু না । যেদিন কমলা আমার চলে গেল, যেদিন কমলচরণ আমার মুখের পানেই চোখ রেখে চোখ বুজলে, সেদিন থেকেই শঙ্কা, ভয় প্রভৃতি উপদ্রবগুলো তাদের পিছনে পিছনেই চলে গেল—কেমন ক’রে যে গেল, সে কথা একদিনের তরে জানতে পারলাম না বাবাঙ্গী—বলিতে বলিতে বৃদ্ধের চোখ দু'টি ছল ছল করিয়া আসিল । দয়াল বাধা দিয়া বলিলেন, থাকৃ সে-সব কথা । এখন আমার কথাটা শুনবে ? বল বাবাজী । দয়াল তখন সেদিনের কাহিনী একে একে বিবৃত করিয়া বলিলেন, এখন উপায় ? 率 শুনিতে শুনিতে কৈলাসের সদাপ্রফুল্ল মুখশ্রী পাংশুবর্ণ হইল। কাতর-কণ্ঠে তিনি বলিলেন, এমন হয় না, হরিদয়াল । স্থলোচনা সতী-সাবিত্রী ছিলেন। দয়াল কহিলেন, আমিও তাই ভেবেছিলাম, কিন্তু স্ত্রীলোকে সকলই সম্ভব। ছি, অমন কথা মুখে এনে না । মানুষ-মাত্রেই পাপ-পুণ্য ক’রে থাকে—এতে স্ত্রী-পুরুষের কোন প্রভেদ দেখিনে। বাবাজী, তোমার জননীর কথা কি স্মরণ হয় না, সে স্মৃতি একেবারে মুছে ফেলেচ? হরিদয়াল লজ্জিত হইলেন, অথচ বিরক্তও হইলেন। কিছুক্ষণ অধোমুখে থাকিয়া তিনি বলিলেন, কিন্তু এখন যে জাত যায় । কৈলাস বলিলেন, একটা প্রায়শ্চিত কর। অজানা পাপের প্রায়শ্চিত্ত নেই কি । আছে, কিন্তু এখানকার লোকে আমাকে যে একঘরে করবে। করলেই বা— হরিদয়াল এবার বিষম ক্রুদ্ধ হইয়া বলিলেন, করলেই বা ! কি বলচ ? একটু বুঝে বল, খুড়ো । * বুঝেই বলছি, দয়াল ! তোমার বয়সও কম হয়নি—বোধ করি পঞ্চাশ পার হল। এতটা বয়স জাত ছিল, বাকী দু-চার বছর না হয় নাই রইল, বাবাজী, এতই কি তাতে ক্ষতি ? ক্ষতি নেই? জাত যাবে, ধৰ্ম্ম যাবে, পরকালে জবাব দেব কি ? কৈলাস কহিলেন, এই জবাব দেবে যে, একজন অনাথকে আশ্রয় দিয়েছিল । হরিদয়াল চুপ করিয়া ভাবিতে লাগিলেন। কথাটা তাহার মনের সঙ্গে একেবারেই মিলিল না। কিছুক্ষণ পরে বলিলেন, তবে স্থলোচনার জামায়ের ঠিকানা দেব না ? \రి ఆ $o-gū