পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/১০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ৰিপ্রদাস এ কথা তোমার মেজদির মুখে শোভা পায় বন্দনা, তোমার মুখে নয় । এই বলিয়। বিপ্রদাস হাসিল । বন্দন বলিল, তারা কি আমার মেজদির চেয়ে বেশি জানে মনে করেচেন ? একটুও না। শূন্য কলসী বলেই মুখ দিয়ে তাদের এত আওয়াজ বার হয় । তাদের আর কিছু না জেনে থাকি এ খবরটা জেনে নিয়েচি মুখুয্যেমশাই। কিন্তু জ্ঞান ত চাই । না চাইনে! জানের আস্ফালনে মুখের মধু তাদের বিষ হয়ে উঠেচে । জানে তারা আমার মেজদির মতো সবাইকে ভালবাসতে ? জানে না। পারে তারা মেজদির মতো ভক্তি করতে ? পারে না। ওদের বন্ধুই কি কেউ আছে ? মনে হয় কেউ নেই, এমনি পরস্পরের বিদ্বেধ । তাদের অভাবটাই কি কম ? বাইরের জাক-জমকে বোঝাই যাবে না ভেতরটা ওদের এত ফোপরা । কিসের জন্যে ওদের নিয়ে এত মাতামাতি ? সমস্ত ভেতরটা যে একেবারে ঘুণে ঝাঝরা করে দিয়েচে । বিপ্রদাস হাসিয়া বলিল, হয়েচে কি বন্দন, এত রাগ কিসের ? কেউ টাক ঠকিয়ে নেয়নি ত ? না, ঠকিয়ে নেয়নি, ধার নিয়েচে । কত ? বেশি না চার-পাচ'শ । তাদের নাম জানো ত ? জানতুম, কিন্তু ভূলে গেছি। এই বলিয়া বন্দন হাসিয়া ফেলিল, কহিল, ছিছি, এত অল্প পরিচয়েও যে কেউ কারও কাছে টাকা চাইতে পারে আমি ভাবতেও পারিনে। বলতে মুখে বাধে না, লজ্জার ছায়া এতটুকু চোখে পড়ে না, এ যেন তাদের প্রতিদিনের ব্যাপার। এ কি করে সম্ভব হয় মুখুয্যেমশাই ? বিপ্রদাসের মুখ গম্ভীর হইল, কিছুক্ষণ স্তব্ধ থাকিয়া কহিল, তোমার মনটাকে তারা বড় বিষিয়ে দিয়েচে বন্দন, কিন্তু সবাই এমনি নয়, ঐ মাসীমার দলটাই তোমাদের সমস্ত দল নয়। যারা বাইরে রয়ে গেল, খুজলে হয়ত তাদেরও একদিন দেখা পাবে। বন্দন বলিল, পাই ভালোই । তখন ধারণা আমার সংশোধন করবো, কিন্তু যাদের দেখতে পেলুম তারা সবাই শিক্ষিত, সবাই পদস্থ লোকের আত্মীয়। গল্পউপন্যাসের রঙ করা ভাষায় সজ্জিত হয়ে এরা দূর থেকে আমার চোখে কি আশ্চৰ্য্য অপরূপ হয়েই না দেখা দিত। মনে গৰ্ব্বের সীমা ছিল না, ভাবতুম আমাদের g