পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/১৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপ্রদাস রোমাঞ্চকর কাহিনী-যা খুশি । আমি ওপরে যাচ্ছি অমুদিকে নিয়ে সমস্ত গুছিয়ে নিতে। কাল সকালের ট্রেনে আমরা বলরামপুর যাত্রা করবো, দিনে দিনে যাবে। ঠাও লাগার ভয় থাকবে না। খ্রিস্টার চাউড়ির ইচ্ছে সঙ্গে যান-বড় ঘরের বড় রকমের যাগ-ক্রিয়া-কলাপ ট্রীয়তাং ভূজ্যতাং ঘটা-পটা কখনো চোখে দেখেননি-আর কোথা থেকেই বা দেখবেন— বিপ্রদাস জিজ্ঞাসা করিল, তুমি নিজে নিশ্চয়ই অনেক দেখেচো— বন্দনা কহিল, এ প্রশ্ন সম্পূর্ণ অবাস্তর ও ভদ্ররুচি-বিগর্হিত। উনি দেখেননি এই কথাই হচ্ছিলো। তা শুনুন । ওঁকে অতুমতি দিয়েচি সঙ্গে যাবার, তাতে এত খুশী হয়েচেন যে তার পরে আমাকে সঙ্গে করে বোম্বাই পর্যন্ত পৌছে দিতে সম্মত হয়েচেন । বিপ্রদাস মুখ অতিশয় গম্ভীর করিয়া কহিল, বলে কি ? এতখানি ত্যাগ স্বীকার আমাদের সমাজে মেলে না, এ শুধু তোমাদের মধ্যেই পাওয়া যায়। শুনে বিস্ময় লাগচে । বন্দন বলিল, লাগবার কথাই যে। জপ-তপ ও আছে, যোল-আনা হিংসেও আছে। এই বলিয়া সে চোখের দৃষ্টিতে এক ঝলক বিদ্যুৎ ছড়াইয়া বাহির হইয়া যাইতেছিল, বিপ্রদাস তাহাকে ডাকিয়া কহিল, এ যেন কথামালার সেই কুকুরের ভূষি আগলানোর গল্প। খাবেও না, আর র্যাড়ের দল এসে যে মনের সাধে চিবোবে তাও দেবে না । মানুষ বঁাচে কি কোরে বলো ত ? বন্দনা দ্বার-প্রাস্তে থমকিয়া দাড়াইয়া কৃত্রিম রোযে ভ্র কুঞ্চিত করিল, বলিল, ঠিক আমাদের মতোই সাধারণ মানুষ, কিছু তফাৎ নেই। লোকগুলো কেবল মিথ্যে ভয় করে মরে | তুমি গিয়ে এবার তাদের ভয় ভেঙ্গে দিয়ে এসো। তাই তো যাচ্ছি। এবং ভূষির সঙ্গে একজনের উপমা দেবার দুৰ্ব্ব,দ্ধিরও শোধ নিয়ে আসবে।--এই বলিয়া বন্দন দীপ্ত কটাক্ষে পুনরায় তড়িৎ বৃষ্টি করিয়া দ্রুত-পদে অদৃপ্ত হইয়া গেল । বিপ্রদাস কহিল, মিস্ট”র-— অশোক সবিনয়ে বাধা দিল, ম, না, চলবে না। ওটাকে বাদ দিতে বাধবে না বলেই ধুতি-চাদর এবং চট জুতো পরে এসেচি বিপ্রদাসবাৰু। উনিও ভরসা দিয়েছিলেন যে— বিপ্রদাস মনে মনে খুণী হইয়া বলিল, ভালোই হ’লো অশোকবাবু, সম্বোধনটা সহজ দাড়ালো। পাড়াগায়ের মানুষ, মনেও থাকে না, অভ্যেসও নেই, এবার স্বচ্ছন্দে আলাপ জমাতে পারবো। শুনলাম আমাদের পল্লীগ্রামের বাড়িতে যেতে ১২৩