পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/১৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ দ্বিজদাস এতক্ষণ চুপ করিয়া ছিল, এবার কথা কহিল, বলিল, তোমার শেষের কথাটা ঠিক হ’ল না মা । নিজে ডুববে সে হয়ত একদিন সত্যি হবে, কিন্তু পরকে ডোবাবে না এ তুমি নিশ্চয় জেনে । মা বললেন, এর এটাও স্বশ্বের নয় দ্বিন্ধু, ওটাও আনন্দের নয়। আসলে তোকে চালাবার একজন লোক থাকা চাই । দ্বিজদাস কহিল, সেই কথাটা স্পষ্ট করে বলে যে সকলের ভাবনা ঘুচুক । আমাকে চালাবার কেউ একজন দরকার । কিন্তু সে যোগাড় তো তুমি প্রায় করে CF5 || | মা বলিলেন, যদি সত্যই করে এনে থাকি সে তোর ভাগ্যি বলে জানিস । তর্ক-বিতর্কের মূল তাৎপর্যটা এবার সকলের কাছেই মুস্পষ্ট হইয়া পড়িল । মা বলিতে লাগিলেন, এত বড় যে কাগু করে তুললি কারো কথা শুনলিনে, বললি দাদার হুকুম ; কিন্তু দাদা কি বলেছিল অশ্বমেধ করতে ? এখন সামলায় কে বলতে ? ভাগ্যে মৈত্রেী এসেছিল সেই তো শুধু ভরসা। দ্বিজদাস বলিল, কাজটা আগে হয়ে যাক মা, তার পরে যাকে খুশি সনন্দ দিও, আমি আপত্তি করবো না, কিন্তু এখুনি তার তাড়াতাড়ি কি ! বন্দন জিজ্ঞাসা করিল, তথন সনন্দ সই করবে কে দ্বিজুবাবু, তৃতীয় পক্ষ নয় তো ? দ্বিজদাস কহিল, তৃতীয় পক্ষের সাধ্য কি ! আজিও মহাপরাক্রান্ত প্রথম ও দ্বিতীয় পক্ষ যে তেমনই বিদ্যমান। বলিতে দুইজনেই হাসিয়া ফেলিল । বিপ্রদাস ও মা পরস্পরের মুখ চাওয়া-চাওয়ি করিলেন কিন্তু অর্থ বুঝিলেন না। অন্নদা আসিয়া বলিল, বন্দনাদিদি, বড়বাবুর ওষুধগুলো যে কাল গুছিয়ে তুললে সেই কাগজের বাক্সটা তো দেখতে পাচ্চিনে—হারালো না ত ? না, হারায়নি অনুদি, কলকাতার বাড়িতেই রয়ে গেছে । দয়াময়ী ভয় পাইয়া বলিলেন, উপায় কি হবে বন্দন, এত বড় ভূল হয়ে গেল। বন্দনা কহিল, ভুল হয়নি মা, আসবার সময়ে সেগুলো ইচ্ছে করেই ফেলে এলুম। ইচ্ছে করে ফেলে এলে ? তার মানে ? ভাবলুম, ওষুধ অনেক খেয়েছেন আর না। তখন মা কাছে ছিলেন না তাই ওষুধের দরকার হয়েছিল, এখন বিনা ওষুধেই সেরে উঠবেন, একটুও দেরি হবে না । কথাগুলো দয়াময়ীর অত্যন্ত ভাল লাগল, তথাপি বলিলেন, কিন্তু ভাল করোনি ম। পাড়াগা জায়গা, ডাক্তার-বস্থি তেমন মেলে না, দরকার হলে— অন্নদা বলিল, দরকার অার হবে না মা ! হলে উনি নিশ্চয় আনতেন, কখনো ফেলে আসতেন না । বন্দনাদিদি ডাক্তার-বষ্ঠির চেয়েও বেশি জানে । Yste