পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/১৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিপ্রদাস ঠিক জানিনে দ্বিন্ধুবাবু। কিন্তু আর সময় নেই আমি চললুম। আবার দেখা হবে, এই বলিয়া সে ধীরে বাহির হইয়া গেল। रै8 মেজদিদিকে জোর করিয়া একটা চেয়ারে বসাইয়া বন্দন তাহার পায়ে আলতা পরাইয়া দিতেছিল। এই মঙ্গলাচারটুকু অন্নদা তাহাকে শিখাইয়া দিয়া নিজে আত্মগোপন করিয়াছে । তাহার চোখ রাঙা, অবিরত অশ্রীবর্ষণে চোখের পাতা ফুলিয়াছে—বন্দনার প্রশ্নের উত্তরে সে সংক্ষেপে বলিয়াছিল, বেীকে মুখ দেখাতে আমি পারবো না । তুমি পারবে না কেন অম্বুদি, তোমার লজ্জা কিসের? আমার লজ্জা এই জন্যে যে, এর আগে মরিনি কেন? শুধু দ্বিজুকেই ত মানুষ করিনি বন্দনাদিদি, বিপিনকেও করেছিলুম। ওর মা যখন মারা গেল কার হাতে দিয়েছিল তার দু'মাসের ছেলেকে ? আমার হাতে । সেদিন কোথায় ছিলেন দয়াময়ী ? কোথায় ছিল তার মেয়ে-জামাই। বলিতে বলিতে সে মুখে আচল চাপিয়া দ্রুতপদে অন্যত্র সরিয়া গেল। মেঝেয় বসিয়া নিজের জামুর উপর দিদির পা দুটি রাখিয়া বন্দনার আলতা পরানো যেন আর শেষ হইতে চাহে না। টপ করিয়া এক ফোটা তপ্ত অশ্র সতীর পায়ের উপর পড়িল ৷ হেট হইয়াও সে বদনার মুখ দেখিতে পাইল না। কিন্তু হাত বাড়াইয় তাহার চোখ মুছাইয়া বলিল, তুই কেন কাদচিল বল তো বন্দন ? বদন তেমনি নত-মুখে বাপরুদ্ধ-কণ্ঠে কহিল, কঁাচে ত সবাই মেজদি। আমি एठ ७१क नद्म । সবাই কাদচে বলে তোকেও কঁদিতে হবে, এত লেখা-পড়া শিখে এই বুঝি তোর যুক্তি হ’লে ? দিদির কথা শুনিয়া বনানা মুহূৰ্ত্তের জন্য মুখ তুলিয়া চাহিল, বলিল, যুক্তি দেখিয়ে কাদতে হবে নইলে মাহুষ কাবে না, তোমার যুক্তিটা বুঝি এই মেজদি ? সতী হাত দিয়া তাহার মাথাটা নাড়িয়া দিয়া সম্বেহে কহিল, তর্কবাগীশের সঙ্গে তর্কে পারবার জো নেই। তা বলিনি রে, তা আমি বলিনি। ওরা ভেবেচে আমার বুঝি সব গেলো, তাই ওদের কার, কিন্তু সত্যি তা নয়। আমার এক দিকে রয়েচেন স্বামী অন্ত দিকে ছেলে—সংসারে কোন ক্ষতিই আমার হয়নি ভাই, আমার জন্তে তুই শোক করিনে। দুঃখ আমার নেই। ›ፀዩ»