পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/৩৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মন্দির করিয়া সে উচ্ছ্বসিত আবেগে কাদিয়া উঠিল। তাহার শ্বশুর-বাটীর একজন দাসী পিছনেই চলিয়া আসিতেছিল, সে তাড়াতাড়ি কাছে আসিয়া কহিল, ছি বেীমা, অমন করে কি কাদতে আছে মা, শ্বশুর ঘর কে না করে । অপর্ণ দুই হাতে মুখ চাপিয়া রোদন নিবারণ করিয়া পাস্ক'র কবাট বদ্ধ করিয়া দিল । ঠিক সেই সময়টিতেই মন্দিরের ভিতর দাডাইয়া পিতা রাজনারায়ণ মদনমোহন ঠাকুরের পার্থে ধূপ-ধূনার ধূমে ও চক্ষুঙ্গলে অস্পষ্ট একখানি দেবীমূৰ্ত্তির অনিন্যস্বন্দর মুখে প্রিয়তমা দুহিতার মুখচ্ছবি নিরীক্ষণ করিতেছিলেন । Wy অপর্ণ স্বামীগৃহে। সেথায় তাহার ইচ্ছাধীন স্বামী-সম্ভাষণের ভিতর এতটুকু আবেগ, এতটুকু চাঞ্চল্যও প্রকাশ পাইল না। প্রথম প্রণয়ের স্নিগ্ধ সঙ্কোচ, মিলনের সলঙ্গ উত্তেজনা, কিছুই তাহার মান চক্ষু দুটির পূর্ব দীপ্তি ফিরাইয়া আনিল না। প্রথম হইতেই স্বামী ও স্ত্রী দুইজনেই যেন পরস্পরের কাছে কোন দুৰ্ব্বোধ্য অপরাধে অপরাধী হইয়া রহিল, এবং তাহারই ক্ষুব্ধ বেদনা কুলপ্লাবিনী উচ্ছসিত তটিনীর ন্যায় একটা দুলঙ্ঘ্য ব্যবধান নিৰ্ম্মণ করিয়া বহিয়া যাইতে লাগিল। একদিন অনেক রাত্রে অমরনাথ ধীরে ধীরে ডাকিল কহিল, অপর্ণা, তোমার এখানে থাকতে কি ভাল লাগে না ? অপর্ণ জাগিয়াছিল, বলিল, না। বাপের বাড়ি যাবে ? যাব । কাল যেতে চাও ? চাই। ক্ষুদ্ধ অমরনাথ জবাব শুনিয়া অবাক হইয়া গেল। কিছুক্ষণ চুপ করিয়া থাকিয়া বলিল, আর যদি যাওয়া না হয় ? অপর্ণ কছিল, তা হলে যেমন আছি তেমনি থাকব । আবার কিছুক্ষণ দু'জনেই চুপ করিয়া থাকিল, অমরনাথ ডাকিল, অপর্ণা ! অপর্ণা অন্যমনস্কভাবে বলিল, কি ! আমাকে কি তোমার কোন প্রয়োজন নাই ? weeta