পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (ষষ্ঠ সম্ভার).djvu/৩৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ আমার বিশ্বাস, সাহিত্যের মধ্য দিয়ে রাশিয়ার গর্কি প্রভৃতিকে ভাল লাগে— তাদের সঙ্গে আমাদের কোন মিল নাই, তবু তাদের appreciate করি। মুসলিম সাহিত্য-সমাজ আমি নিজে একটা গড়ব । এ-ছাড়া আমাদের সত্যি পথ নেই— আমি মুসলমানদের ঐ কথাটা অনেকবার বলেছি। মুসলমান ছেলেরা আমার কাছে একখানা বই রাখলে, উপরে লেখা—“খালক বঙ্কিমের গ্রন্থাবলী ।” বললাম, অপমান করবার জন্তেই কি এসেছ ? একজন মৃত ব্যক্তিকে অপমান করা ঠিক নয়। বঙ্কিমবাবু অনেক জায়গায় অকারণ মুসলমানদের আক্রমণ করেছেন। তখন ওরা ছিল অত্যন্ত নিজীব। কিন্তু সমস্ত action-এরই reaction আছে। বঙ্কিম-দুহিতা’ বলে একখানা বই—অনেক নোংরা কথা তাতে আছে, এগুলো হতে বাধ্য। জাহানারা একদিন বললে, একটা লেখা দিতে হবে । আমার 'বর্ষবাণী’ বেরুচ্ছে । তার আগে এখানের কাজী মোতাহার হোসেন বললেন, আপনার কি আমাদের একঘরে করে রেখে দেবেন ? রবীন্দ্রনাথ বললেন, আমার উপরে এদের অনেকগুলি চিঠি এসেছে । আমায় চিঠি দিয়েছে ঔরঙ্গজেব সম্বন্ধে কি কতকগুলি তুলে দিতে হবে । রবীন্দ্রনাথ ভয়ানক ক্ষুব্ধ হয়ে বললেন, ও-সবের ভেতর আর আমি যেতে চাই না । ভোলানাথ যখন মারা গেল তার অপরাধটা কি ? আক্রাম খার ছেলেই কাগজ চালায় । তাদের spirit-এর একটা দৃষ্টান্ত দিই । নরেন দেবের কাছে লেখা চলে গেছে, বলে, “বাংলা থোড়া বহুং সমঝতে হেঁ, বে লনে নেই সাকৃতে ।” আমাদের আশঙ্কা ওরা প্রথমে বাংলাটাকে নষ্ট করবে । ওরা যখন বাংলাকে মাতৃভাষা বলে স্বীকার করে না ।*—বাতায়ন, ১৯ ভাদ্র, ১৩৪৩ ।

  • ১৯৩৬ সনের ৩১শে জুলাই তারিখে ঢাকা রূপলাল হাউসে শাস্তি’ পত্রিকার পক্ষ হইতে অমুষ্ঠিত সম্মিলনে প্রদত্ত বক্তৃতা ।