পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (সপ্তম সম্ভার).djvu/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গৃহদাই করিয়া কেদারবাবু সোৎসাহে বলিয়া উঠিলেন, না, না, স্বরেশ, তোমার লজ্জা বোধ করবার ত এতে কোনই কারণ নেই। বরঞ্চ কর্তব্য করবার গৌরব আছে। তুমি বুঝতে পারচ না যে, কি বিপদ থেকে আমাদের পরিত্রাণ করেচ এবং কতদূর পর্যন্ত আমরা তোমার কাছে কুতজ্ঞ । মেয়ের দিকে চাহিয়া কহিলেন, আমি কাল থেকে এই বড় আশ্চৰ্য্য হচ্ছি অচলা, সে লোকটা স্বরেশের মত ছেলের সঙ্গে বন্ধুত্ব করেছিল কি করে, আর কি করেই বা এতদিন ধরে সে বজায় রেখেছিল। একটুখানি থামিয়া বলিলেন, যে এ পারে, সে যে আমাদের মত দুটি নিরীহ মানুষকে ভুলিয়ে রাখবে, এ বেশি কথা নয় মানি, কিন্তু এও বড় অদ্ভূত যে, এই লোকটা কি, কেমন—একটু অনুসন্ধান করার কথাও আমার মত প্রবীণ বয়সের লোকের মনেও একটা দিন ওঠেনি। আশ্চৰ্য্য ! সুরেশ কথা কহিল না, কেদারবাবুর মুখের প্রতি মুখ তুলিয়। চাহিতে পৰ্য্যন্ত পারিল না । Jr কেদারবাবু ক্ষণকাল অপেক্ষা করিয়া নিজের পোষাকের প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া রলিলেন, আমার অনেক কথা জিজ্ঞাসা করবার আছে বাবা ; একটু ব’সো, আমি এইগুলো ছেড়ে আসে ; বলিয়া প্রস্থানের উদ্যোগ করিতেই সুরেশ কহিল, আমার বেলা হয়ে গেছে । আজ যাই, আর একদিন আসব, বলিয়া ব্যস্ত হইয়াই উঠিয়া পড়িল এবং কোনমতে একটা নমস্কার সারিয়া লইয়া তাহার সঙ্গে সঙ্গেই বাহির হইয়া গেল । কিন্তু পরদিন সকালেই আবার তাহাকে দেখিতে পাওয়া গেল এবং পরদিনও ঠিক এই সময়েই তাহার গাড়ির শব্দ নীচে আসিয়া থামিল । কিন্তু ইহার পরদিনও আবার যখন তাহার গাড়ির শব্দ শুনা গেল, তখন বেলা হইয়াছে । পিতাকে স্বানাহারের তাগিদ দিয়া অচলা উঠিবার চেষ্টা করিতেছে—কিন্তু র্তাহার আর উঠা হইল না, তিনি স্বরেশকে সানন্দে আহবান করিয়া লইয়া গল্প শুরু করিয়া দিলেন । সুরেশ ইহা লক্ষ্য করিয়াছিল বলিয়াই দুই-চারিট সাধারণ কথাবাৰ্ত্তার পর যখন উঠিতে গেল, তখন তাহার শুষ্ক রুক্ষ মাথার প্রতি দৃষ্টিপাত করিয়া আজ অকস্মাৎ এক নিমিষেই কেদারবাবু ব্যতিব্যস্ত হইয়া পড়লেন । বলিলেন, এখনো ত তোমার স্নানাহার হয়নি সুরেশবাৰু? স্বরেশ সহস্তে কহিল, আমার আহার একটু বেলাতেই হয়। কেদারবাবু তাহা কানেই লইলেন না, বলিতে লাগিলেন, এবং এক নিমিষেই একেবারে ব্যস্তসমস্ত হইয়া উঠিলেন—অ্যা, এখনও নাওয়া-খাওয়া হয়নি ? না, আর এক মিনিট দেরি নয় স্বরেশ । এইখানেই স্নান করে যা পারো খেয়ে নাও । মা 文盘 १भ-8