পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (সপ্তম সম্ভার).djvu/৩৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ অমুসরণ করিয়া থাকে! সে কি মারাত্মক অপরাধ ? পাশ্চাত্য পণ্ডিত কি পণ্ডিত নন, যে র্তাহার মতানুযায়ী হইলেই গালিগালাজ খাইতে হইবে ! দ্বিতীয় বিবাদ ঋকৃবেদের অগ্নে’ শব্দ লইয়া। এই পদাঙ্কাকুসারী লোকটা কেন যে জানিয়া শুনিয়াও এ শব্দটাকে প্রক্ষিপ্ত মনে করিয়া অগ্রে’ পাঠ গ্রহণ করিয়াছিল, সে আলোচনা পরে হইবে । কিন্তু ভট্টাচাৰ্য্য মহাশয়ের কি জানা নাই যে, বাঙলার অনেক পণ্ডিত আছেন যাহারা পাশ্চাত্য পণ্ডিতের পদাঙ্ক অনুসরণ না করিয়াও অনেক প্রামাণ্য শাস্ত্রগ্রন্থের মধ্যে প্রক্ষিপ্ত শ্লোকের অস্তিত্ব আবিষ্কার করিয়া গিয়াছেন, এবং তাহা স্পষ্ট করিয়া বলিতেও কুষ্ঠিত হন নাই। কারণ, বুদ্ধিপূর্বক নিরপেক্ষ আলোচনার দ্বারা যদি কোন শাস্ত্রীয় শ্লোককে প্রক্ষিপ্ত বলিয়া মনে হয়, তাহা সবসমক্ষে প্রকাশ করিয়া বলাই ত শাস্ত্রের প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধা। জ্ঞানতঃ চাপাচুপি দিয়া রাখা বা অজ্ঞানতঃ প্রত্যেক অমুম্বার বিসর্গটিকে পর্যন্ত নির্বিচারে সত্য বলিয়া প্রচার করায় কোন পৌরুষ নাই। তাহাতে শাস্ত্রেরও মান্য বাড়ে না, ধৰ্ম্মকেও খাটো করা হয়। বরঞ্চ, যাহাদের শাস্ত্রের প্রতি বিশ্বাসের দৃঢ়তা নাই, শুধু তাহাদেরই এই ভয় হয়, পাছে দুই-একটা কথাও প্রক্ষিপ্ত বলিয়া ধরা পড়িলে সমস্ত বস্তুটাই ঝুটা হইয়া ছায়াবাজির মত মিলাইয়া যায়। স্বতরাং যাহা কিছু সংস্কৃত শ্লোকের আকারে ইহাতে সন্নিবিষ্ট হইয়াছে, তাহার সমস্তটাই হিন্দুশাস্ত্র বলিয়া মানা চাই-ই । বস্তুতঃ, এই সত্য ও স্বাধীন বিচার হইতেই ভ্ৰষ্ট হইয়াই হিন্দুর শাস্ত্ররাশি এমন অধঃপতিত হইয়াছে। নিছক নিজের বা দলটির সুবিধার জন্য কত যে রাশি রাশি মিথ্যা উপন্যাস রচিত এবং অনুপ্রবিষ্ট হইয়া হিন্দুর শাস্ত্র ও সমাজকে ভারাক্রান্ত করিয়াছে, কত অসত্য যে বেনামীতে প্রাচীনতার ছাপ মাখিয়া ভগবানের অনুশাসন বলিয়া প্রতিষ্ঠা লাভ করিয়াছে, তাহার সীমা-পরিসীমা নাই। জিজ্ঞাসা করি, ইহাকে মান্ত করাও কি হিন্দুশাস্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধ করা ? একটা দৃষ্টান্ত দিয়া বলি। কুলানবের "আমিষাসবসৌরভাহীনং যন্ত মুখং ভবেৎ। প্রায়শ্চিন্তী স বজ্জশ্চি পশুরের ন সংশয়ঃ” ইহাও হিন্দুর শাস্ত্র । এ কথাও ভগবান মহাদেব বলিয়া দিয়াছেন। চব্বিশ ঘণ্টা মুখে মদমাংসের স্বগন্ধ না থাকিলে সে একটা অন্ত্যজ জানোয়ারের সামিল। অধিকারিভেদে এই শাস্ত্রীয় অনুষ্ঠানের দ্বারাও হিন্দু স্বর্গের আশা করে । কিন্তু তান্ত্রিকই হউক, আর ঘাই হউক, সে হিন্দুত বটে। ইহা শাস্ত্রীয় বিধি ত বটে ! স্বতরাং স্বৰ্গবাসও ত স্বনিশ্চিত বটে। কিন্তু তবু যদি কোন পাশ্চাত্য পণ্ডিত humbug বলিয়া হাসিয়া উঠেন, তাহার হাসি থামাইবারও কোনও উপায় দেখিতে পাওয়া যায় না। অথচ হিন্দুর ঘরে জন্সিয়া শ্লোকটি মিথ্যা বলাতেও শঙ্কা আছে। কারণ, আর দশটা হিন্দু শাস্ত্র হইতে হয়ত বচন বাহির হইয়া পড়িবে, যে, মহেশ্বরের তৈরী এই بدون جه