পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (সপ্তম সম্ভার).djvu/৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ হইয়া গেল। মহিম স্তব্ধ হইয়া কিছুক্ষণ বসিয়া থাকিয়া অবশেষে বন্ধুর প্রতি চাহিয়া কহিল, ব্যাপার কি স্বরেশ ? সুরেশ উদ্ধতভাবে জবাব দিল, তোমার মত আমার টাকাটাই প্রাণ নয়! ভদ্রলোক বিপদে পড়ে সাহায্য চাইলে আমি দিই—ব্যস্ এই পৰ্য্যন্ত । তিনি যদি শোধ দিতে না পারেন ত আশা করি, সে দোষ আমার নয়। তবু যদি আমাকেই দোষী মনে কর ত একশবার করতে পার, আমার কোন আপত্তি নেই। t বন্ধুর এই অসংলগ্ন কৈফিয়ৎ এবং তাহ প্রকাশ করিবার অপরূপ ভঙ্গি দেখিয়া মহিম যথার্থ-ই মূঢ়ের মত চাহিয়া থাকিয়া শেষে বলিল, হঠাৎ তোমাকেই বা দোষী ভাবতে যাব কেন, তার কোন তাৎপৰ্য্যই ত ভেবে পেলুম না মুরেশ ; দয়া করে আর একটু খুলে না বললে ত বুঝতে পারব না । * - সুরেশ তেমনি রুক্ষস্বরে কহিল, খুলে আবার বলব কি ! বলবার আছে বা কি ! মহিম কহিল, তা আছে। আমি সেদিন যখন বাড়ি যাই, তখন এদের তুমি চিনতে না । এর মধ্যে এমন ঘনিষ্ঠ পরিচয় হ’লই বা কি করে, আর একটা ব্রাহ্মপরিবারের বিপদে চার হাজার টক দেবার মত তোমার মনের এতখানি উদারতা এল কোথা থেকে, আপাততঃ এইটুকু বুঝিয়ে দিলে আমি কৃতাৰ্থ হ’ব সুবেশ । সুরেশ বলিল, তা হতে পারো । কিন্তু আমার গল্প করবার এখন সময় নেই— এখুনি উঠতে হবে । তা ছাড়া, কেদারবাবুকেই জিজ্ঞাসা করে না, তিনি সমস্ত বলবার জন্যেই ত অপেক্ষা করে আছেন । তাই ভাল, বলিয়া মহিম উঠিয়া দাড়াইল । কহিল, শোনবার ভারি কৌতুহল ছিল, কিন্তু তবু এখন তার অপেক্ষায় বসে থাকবার সময় নেই। আমি চললুম—- স্বরেশ স্থির হইয়া বসিয়া রহিল—কোন কথা কহিল না । মহিম বাহিরে আসিতে দেখিতে পাইল, স্বমুখের রেলিঙ ধরিয়া এই দিকে চাহিয়াই অন্ধকারে অচলা দাড়াইয়া আছে । কিন্তু সে কাছে আসিবার বা কথা কহিবার কিছুমাত্র চেষ্টা করিল না দেখিয়া সেও নীরবে সিড়ি বাহিয়া ধীরে ধীরে নীচে নামিয়া গেল । ჯო কয়েকটা अउाछ জরুরি ঔষধ কিনিতে মহিম কলিকাতায় আসিয়াছিল, স্বতরাং রাত্রের গাড়িতেই বাড়ি ফিরিয়া গেল। স্বরেশ সন্ধান লইয়া জানিল, মহিম তাহার বাসায় আসে নাই, দিন-চারেক পরে বিকালবেলায় কেদারবাবুর বসিবার ঘরে বসিয়া 8