পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (সপ্তম সম্ভার).djvu/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

श्रृंश्ांशुं হয় । সেজদা তখন আট বছরের ছেলে । তার মা তার জন্ম দিয়েই মারা যান ; বড় দু'ছেলে আগে ডিপথিরিয়া রোগে মারা গিয়েছিল । তাই আমার মা আসা পৰ্য্যন্তই হলেন এ বাড়ির গিল্পী। তার পরে বাবা গেলেন, আমরা এ-বাড়িতেই বইলুম। তার অনেক পরে তোমার শ্বশুর মারা গেলেন, আমরা কিন্তু রয়েই গেলুম। এই সবে পাঁচ বছর হ’ল পলাশীর ঘোষাল-বাড়িতে আমার বিয়ে দিয়ে সেজদা আমাকে দূর করে দিয়েছেন। মা বেঁচে থাকলেও যা হোক একটু জোর থাকত । বড়বে এই ঘরে নাকি ? বলিয়া একটি বৃদ্ধ-গোছের বেঁটে-খাটো গৌরবর্ণ ভদ্রলোক দ্বারের কাছে আসিয়া দাড়াইলেন । মৃণাল কহিল, এসো, এসো। অচলার পানে চাহিয়া মুখ টিপিয়া হাসিয়া কহিল, ঐটি আমার কর্তা ঠানদি । আচ্ছা, তুমিই বল ত ভাই, ওই বাহাত্তরে বুড়োর সঙ্গে আমাকে মানায় ? এ-জন্মের রূপ-যৌবন কি সব মাটি হয়ে গেল না ভাই ? অচলা জবাব দিবে কি, লজ্জায় মাথা হেঁট করিল। ভদ্রলোকটির নাম ভবানী ঘোষাল, তিনি হাসিয়া কহিলেন, বিশ্বাস করবেন না ঠানদি--সব মিছে কথা । ওর কেবল চেষ্টা আমাকে খেলো করে দেয়। নইলে বয়স ত আমার এই সবে বাহান্ন কি তি-- * মৃণাল কহিল, চুপ করে। এই সেজদটি যে আমার কি শক্র তা ভগবানই জানেন। আমাকে সব দিকে মাটি করেচেন। আচ্ছ, এই বুড়োর হাতে দেওয়ার চেয়ে, হাত পা বেঁধে কি আমায় জলে ফেলে দেওয়া ভাল হত না ঠানদি ? সত্যি বলো ভাই । অচলা তেমনি আরক্ত মুখে নীরব হইয়া রহিল। ঘোষাল ধীরে ধীরে ঘরে ঢুকিয়া কিছুক্ষণ চুপ করিয়া অচলার লজ্জানত মুখের প্রতি চাহিয়া থাকিয়া সহসা একটা মস্ত আরামের নিশ্বাস ফেলিয়া বলিলেন, বাচালেন ঠানদি, এ ছুড়ীর অহঙ্কার এতদিনে ভাঙল । রূপের দেমাকে এ চোখে-কানে দেখতেই পেত না । স্ত্রীকে লক্ষ্য করিয়া কহিলেন, কেমন এইবার হ’ল ত ? বনদেশে এতদিন শিয়াল রাজা ছিলে, সহরের রূপ কারে বলে এইবার চেয়ে দেখো ! মৃণাল কহিল, তা বৈকি! আমার যেখানে অহঙ্কার সেখানে ভাঙতে যায়—সাধ্যি কার ? বলিয়া স্বামীর প্রতি সে যে গোপন কটাক্ষ করিল, আচলার চোখে সহসা তাহা পড়িয়া গেল । ঘোষাল হাসিয়া বলিলেন, শুনলেন ত ঠানদি—একটু সাবধানে থাকবেন, দুজনের যে ভাব, যে আসা-যাওয়া, বলা যায় না—আর আমি ত বাহাত্তরে বুড়ে, f ፃኔ