পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শাস্তিনিকেতন একটু একটু করে জানছে— সমস্তকে এক মুহূর্তে এক আলোতে একযোগে জানা যে কাকে বলে তা সে বোঝেও না, কিন্তু তৎসত্ত্বেও সেই বিশ্বের জ্যোতিতেই যে তার চোখের জ্যোতির সার্থকত এই তত্ত্বটি তার অন্ধতার অন্ধকারে তার মুদ্রিত চোখের মধ্যেও প্রচ্ছন্ন রয়েছে। তেমনি আমার মধ্যে যে এক সত্য আছে, যাকে অবলম্বন করে আমার জীবনের সমস্ত ঘটনা পরস্পর গ্রথিত হয়ে একটি অর্থ লাভ করে, সেই আমার মধ্যেকার সত্য বিশ্বের সত্যকে আপনার চরম সত্য বলে সর্বত্র অতি সহজে উপলব্ধি করবে— এই আকাজক্ষণটি তার মধ্যে অহরহ গৃঢ়ভাবে রয়েছে। এই আকাঙ্ক্ষাটির গভীর ক্রিয়া-ফলে আমাদের আত্মার মুদ্রিত চোখ একদিন ফুটবে— সেদিন আমরা যে দিকে চাব কেবল খও বস্তুকে দেখব না, অখণ্ড সত্যকে দেখব । যিনি সকলের চেয়ে সত্য র্তাকেই সকলের চেয়ে সহজে দেখা, এই হচ্ছে আমাদের সকল দেখার চরম সাধনা। সেই দেখাটি খুলবে, সেই চোখটি ফুটবে, এইজন্যেই তো রোজ আমরা দুবেলা তার নাম করছি, তাকে প্রণাম করছি। তাকে ডাকতে ডাকতে, তার দিকে মুখ তুলতে তুলতে ভিতরের সেই শক্তি ক্রমে জাগ্রত হবে, বাধা কেটে যেতে থাকবে, আত্মার চোখ খুলে যাবে। যেমনি খুলে ষাবে আমনি আর তর্ক নয়, যুক্তি নয়, কিছু নয়— আমনি সহজে দেখা— অমনি আমার মনের আনন্দের সঙ্গে সেই আকাশ-ভরা আনন্দের একেবারে গায়ে গায়ে ঠেকা ; আমনি আমার সমস্ত শরীরে তার স্পর্শ, সমস্ত মনে র্তার অনুভূতি। অমনি তখনই অতি সহজে উপলব্ধি যে, তারই আনন্দে আলোক আমার চোখের তারায় আলো হয়ে নাচছে, তারই আনন্দে বাতাস আমার দেহের মধ্যে প্রাণ হয়ে বয়ে যাচ্ছে । আমনি জানতে

ፃ8