পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শাস্তিনিকেতন পরিমিত ভাব রক্ষা করা। ভোগের প্রাচুর্য শুচিতার আদর্শকে যেন আঘাত করে। কেন করে ? যা আমার ভালো লাগে তাকে প্রচুর পরিমাণে সঞ্চয় করা এবং ভোগ করার মধ্যে অপবিত্রতা কেন থাকবে ? বিলাসের মধ্যে স্বভাবত দূষণীয় কী আছে ? যে-সকল জিনিস আমাদের দৃষ্টি-প্রতি-স্পৰ্শ-বোধকে পরিতৃপ্ত করে তারা তো সুন্দর, তাদের তো নিন্দ করবার কিছু নেই। তবে নিন্দাটা কোনখানে ? বস্তুত নিন্দাটা আমারই মধ্যে। যখন আমি সর্বপ্রযত্নে আমাকেই ভরণ করতে থাকি তখনই সেটা অশুচিকর হয়ে ওঠে। এই আমার দিকটার মধ্যে একটা অসত্য আছে যেজন্য এই দিকটা অপবিত্র। অন্নকে যদি গায়ে মাখি তবে সেটা অপবিত্র, কিন্তু যদি খাই তাতে অশুচিত নেই— কারণ গায়ে মাখাটা অল্পের সত্য ব্যবহার নয় । আমার দিকটা যখন একান্ত হয় তখন সে অসত্য হয়, এইজন্যই সে অপবিত্র হয়ে ওঠে— কেননা কেবলমাত্র আমার মধ্যে আমি সত্য নই। সেইজন্য যখন কেবল আমার দিকেই আমি সমস্ত মনটাকে দিই তখন আত্মা অসতী হয়ে ওঠে, সে আপনার শুচিতা হারায়। আত্মা পতিব্ৰতা স্ত্রীর মতে— তার সমস্ত দেহ মন প্রাণ আপনার স্বামীকে নিয়েই সত্য হয় । তার স্বামীই তার প্রিয় আত্মা, তার সত্য আত্মা, তার পরম আত্মা । তার সেই স্বামী সম্বন্ধেই উপনিষদ বলেছেন : এষাস্ত পরমাগতি:, এষাস্ত পরম সম্পং, এযোহস্ত পরমো লোকঃ, এষোহস্ত পরম আনন্দঃ । ইনিই তার পরম গতি, ইনিই তার পরম সম্পদ, ইনিই তার পরম আশ্রয়, ইনিই তার পরম আনন্দ । কিন্তু, যখন আমি সমস্ত ভোগকে আমার দিকেই টানতে থাকি, যখন অহোরাত্রি সমস্ত জীবন আমি এমন করে চলতে থাকি যেন g : ግኒ”