পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শান্তিনিকেতন বেলাকার স্তব্ধতা ব্যর্থ হল- মায়াকে খুজিলুম, ছায়াকে পেলুম, কোথাও কিছুই ধরা দিল না।’ ማኔ ওরে মত্ত, কোন মাভৈঃ বাণীটির জন্যে আমার এই অস্তরের একলা মানুষ এমন উৎকণ্ঠিত হয়ে কান পেতে রয়েছে ? সে হচ্ছে চিরদিনের সেই সত্য বাণী : পিতা নোহসি । পিতা, তুমিই আছ। তুমি আছ পিতা, তুমি আছ— আমাদের পিতা তুমি আছ— এই বাণীতেই সমস্ত শূন্ত ভরে গেল, সমস্ত ভার সরে গেল, কোনো ভয় আর কোথাও রইল না । আর, ওটা কী ভয়ানক মিথ্যা— ওই যে ‘আমি আছি ! কই আছ, তুমি আছ কোথায় ? তুমি ভবসমুদ্রের কোন ফেনাগুলাকে আশ্রয় করে বলছ ‘আমি আছি ? যে বুদবুদটি যখনই ফেটে যাচ্ছে তাতে তখনই তোমারই ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে । সংসারে দীর্ঘনিশ্বাসের যে লেশমাত্র তপ্ত হাওয়াটুকু তোমার গায়ে এসে লাগছে তাতে একেবারে তোমার সত্তাকেই গিয়ে ঘা দিচ্ছে। তুমি আছ কিসের উপরে ? তুমি কে? অথচ আমার অস্তরের মানুষ যখন বলছে চাই’ তখন তুমি অহংকার করে তাকে গিয়ে বলছ, ‘আমি আছি। তুমি আমাকেই চাও, তুমি আমাকে নিয়েই খুশি থাকে। এ তোমার কেমন দান ! তোমার প্রকাগু বোঝা বইবে কে ! এ যে বিষম ভার! এ যে কেবলই বস্তুর পরে বস্তু, কেবলই ক্ষুধার পরে ক্ষুধা, দুর্ভিক্ষের পরে দুর্ভিক্ষ । এ তো তোমাকে আশ্রয় করা নয়, এ যে তোমাকে বহন করা। তুমি যে পদু, তোমার যে পা নেই, তুমি যে কেবলই অন্যের উপরেই ভর দিয়ে সংসারে চলে বেড়াও । তোমার এ বোঝা মেখানকার সেইখানেই পড়ে পড়ে ধুলোর সঙ্গে ধুলো হয়ে যেতে থাক । २**२