পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পিতার বোধ যাক। তুমি যেমন করে আপনাকে দান করেছ তেমনি করে আমাকে গ্রহণ করে । নমস্তেহস্তু ! তোমাকে যেন নমস্কার করতে পারি। এই আমার পিতার বোধ যখন জাগে তখন নমস্কারের মধুর রসে সমস্ত জীবন একেবারে পরিপূর্ণ হয়ে যায়। সর্বত্র যখন পিতাকে পাই তখন সর্বত্র হৃদয় আনন্দে অবনত হয়ে পড়ে। তখন শুনতে পাই জগৎ-ব্রহ্মাণ্ডের গভীরতম মর্মকুহর হতে একটিমাত্র ধ্বনি অনন্তের মধ্যে নিশ্বসিত হয়ে উঠছে : নমো নমঃ । লোকে লোকাস্তরে ‘নমো নমঃ’ স্বমধুর স্থগম্ভীর ‘নমো নমঃ’। তখন দেখতে পাই নমস্কারে নমস্কারে নক্ষত্রের সঙ্গে নক্ষত্র একটিমাত্র জায়গায় তাদের জ্যোতির্ময় ললাটকেমিলিত করেছে। সমস্ত বিশ্বের এই আশ্চর্য সুন্দর সামঞ্জস্তা— যে সামঞ্জস্য কোথাও কিছুমাত্র ঔদ্ধত্যের দ্বারা স্বষ্টির বিচিত্র ছন্দকে একটুও আঘাত করছে না, আপনার অণুতে পরমাণুতে অনন্তের আনন্দকে সম্পূর্ণ মেনে নিচ্ছে— এই তো সেই নমস্কারের সংগীত উর্ধের্ব-অধোতে দিকে-দিগন্তরে ‘নমো নমঃ’ । এই সমস্ত বিশ্বের নমস্কারের সঙ্গে আমার চিত্ত যখন তার নমস্কারটিকেও এক করে দেয়, সে যখন আর পৃথক থাকতে পারে না, তখন সে চিরকালের মতো ধন্য হয়— তখনই সে বুঝতে পারে, আমি বেঁচে গেলুম, আমি রক্ষা পেলুম— তখনই জগতের সমস্তের মধ্যেই সে আপনার পিতাকে পেলে, কোনো জায়গায় তার আর কোনো ভয় রইল না । i পিতা, নমস্তেহস্তু। তোমাকে যেন নমস্কার করতে পারি। এই পারাই চরম পারা, এই পারাতেই জীবনের সকল পারা শেষ হয়ে মায়। যেন নমস্কার করতে পারি ! , সমস্ত যাত্রার অবসানে নদী যেমন ९8 १