পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শাস্তিনিকেতন এই মুহূর্তে সন্ধ্যাকালের গন্ধগহন কুসুমের সভায়, নিবিড় তারারাজির দীপালোকিত প্রাঙ্গণে, বিশ্বের নমস্কার কী সৌন্দর্যে কী একান্ত নম্রতায় নত হয়ে রয়েছে ! কিন্তু, যেখানে দশজন মানুষ এসেছে সেখানে বাধার অন্ত নেই। সেখানে চিত্তবিক্ষেপ কত ঢেউ তুলেছে– কত সংশয়, কত বিরোধ, কত পরিহাস, কত অস্বীকার, কত ঔদ্ধত্য ! সেখানে লোক । কত কথাই বলে—এ কোন দলের লোক, কোন সমাজের, এর কী ভাষা ! এ কী ভাবে, এর চরিত্রে কোথায় কী দরিদ্রতা আছে তাই নিয়ে এত তর্ক, এত প্রশ্ন ! এত বিরুদ্ধতার মাঝখানে কেমন করে নিয়ে যাব সেই প্রদীপখানি, একটু বাতাস যার সয় না! সেই ফুলের অৰ্ঘ্য কেমন করে পৌছে দেব, একটু স্পর্শেই যা মান হয়! সেই শক্তি তো আমার নেই যার দ্বারা সমস্ত বিরুদ্ধতা নিরস্ত হবে, সব বিক্ষোভের তরঙ্গ শাস্ত হবে । জনতার মাঝখানে যেখানে তার উৎসব সেখানে আমি ভয় পাই। এত বিরুদ্ধতাকে ঠেলে চলতে আমি কুষ্ঠিত। বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের রাজরাজেশ্বর যেখানে তার সিংহাসনে আসীন সেখানে তার চরণে উপবেশন করতে আমি ভয় করি নি। সেখানে গিয়ে বলতে পারি, হে রাজন, তোমার সিংহাসনের এক পাশে আমায় স্থান দাও। তুমি তো কেবল বিশ্বের রাজা নও, আমার সঙ্গে যে তোমার অনন্ত কালের সম্বন্ধ । এ কথা বলতে কণ্ঠ কম্পিত হয় না, হৃদয় দ্বিধান্বিত হয় না। কিন্তু, ভিড়ের মধ্যে তোমাকে আমার বলে স্বীকার করতে কণ্ঠ যদি কম্পিত হয়, তবে মাপ কোরো হে হৃদয়েশ্বর। ভিড়ের মধ্যে যখন ডাক দাও, তখন কোন ভাষায় সাড়া দেব ? তোমার চরণে হৃদয়ের যে ভাষা সে তো নীরব ভাষা , যে স্তবগান তোমার সে তো । "অশ্রত গান । সে যে হৃদয়বীণার তন্ত্রে তন্ত্রে গুঞ্জিত হয়ে ওঠে সেই \}6: e.