পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রতীক্ষা : তাদের স্থখ নেই। এ ঘদি সত্য না হত তা হলে কি পৃথিবীতে র্তার নাম থাকত ! তা হলে অন্য কথাই সকলের মনের মধ্যে জাগত, তারই কোলাহলে সমস্ত সংসার উত্ত্যক্ত হয়ে উঠত। ভক্তের হৃদয়ের আনন্দজ্যোতির সঙ্গে প্রত্যেক মানুষের নিয়ত যোগ হচ্ছেই। এই জনপ্রবাহের ধ্বনির মাঝখানে, এই-সমস্ত ক্ষণস্থায়ী কল্লোলের মধ্য থেকে, মানবাত্মার অমর বাণী জাগ্রত হয়ে উঠছে । মাহুষের চিরদিনের সাধনার প্রবাহকে সেই বাণী প্রবাহিত করে দিচ্ছে— অতল পঙ্কের মধ্য থেকে পদ্ম বিকশিত হয়ে উঠছে – কোথা থেকে হঠাৎ বসন্ত-সমীরণ আসে যখন, এসে হৃদয়ের মধ্যে বয়, তখন আমাদের অস্তরে পূজার পুষ্প ফুটব-ফুটব করে ওঠে। তাই দেখছি যে যদিচ এত অবহেলা, এত দ্বেষ বিদ্বেষ, চারি দিকে এত উন্মত্ততা, তথাপি মানবাত্মা জাগ্রত আছে। কারণ, মানবের ধর্মই তাকে চিন্তা করা। মানবের ধর্ম যে তার চৈতন্যকে কেবল সংসারে বিলুপ্ত করে দেবে তা নয়। সে যে কেবলই জেগে জেগে উঠছে। যারা নিদ্রিত ছিল তারা হঠাৎ জেগে দেখছে যে, এই অনন্ত আকাশে তার আরতির দ্বীপ জলেছে, সমস্ত বিশ্ব র্তার বন্দনা গান করছে। এতেও কি মানুষের দুটি হাত জোড় হবে না ! তোমার না হতে পারে, কিন্তু সমস্ত মানবের অস্তরের মধ্যে তপস্বীদের কণ্ঠে স্তবগান উঠছে। অনস্তদেবের প্রাঙ্গণে সেই স্তবগান ধ্বনিত হচ্ছে শোনো একবার শোনো । সমস্ত মানবের ভিতরে, মানবের নিভৃত কন্দরে যেখানে ভক্ত বসে রয়েছেন, সেইখানে তার কী বনানাধনি উঠছে শোনো। এই অর্থহীন নিখিল মানবের কলোচ্ছ্বাসের মধ্যে সেই একটি চিরস্তন বাণী কালে কালে যুগে যুগে জাগ্রত। তাকে বহন করবার জন্য বরপুত্ৰগণ আগে আগে চলেছেন, Wovo.