পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শান্তিনিকেতন সেই “আরো আছের ডাককে অমান্ত করি, তা হলে মানুষের ধর্মের পতন। যদি তাকে জ্ঞানে অমান্য করি তা হলে মানুষের মুঢ়তায় পতন । যদি সমাজে অমান্য করি তা হলে জড়তায় পতন । কালে কালে মহাপুরুষেরা কী দেখান ? তারা দেখান যে ‘তোমরা যাকে ধর্ম বলে ধরে রয়েছ ধর্ম তার মধ্যে পর্যাপ্ত নন’ । মানুষকে মহাপুরুষেরা মুক্তির পথ দেখিয়ে দেন ; তারা বলেন, চলতে হবে । কিন্তু, মানুষ তাদেরই আশ্রয় করে খুটি ধরে দাড়িয়ে যায়, আর চলতে চায় না। মহাপুরুষেরা যেপর্যন্ত গিয়েছেন তারও বেশি তাদের অস্থপন্থীরা যাবেন এই তো তাদের ইচ্ছা ; কিন্তু তারা তাদের বাক্য গলায় বেঁধে আত্মহত্যাসাধন করে। মহাপুরুষদের পথ হচ্ছে পথ, কেবলমাত্র পথ । তারা সেই পথে চলেছিলেন এইটেই সত্য । সুতরাং, পথে বসলে গম্যস্থানকে পাব না, পথে চললেই পাব । উপরের থেকে সেই চলবার ডাকটিই আসছে। সেই বাণীই বলছে, ‘তুমি বসে থেকে কিছু পাবে না। চলো, আরো চলে, আরো আছে, আরো আছে।' মাহুষের ধর্ম চলছে তা আমরা দেখতে পাচ্ছি। ধর্ম আমাদের কোনো সীমাবদ্ধ জিনিসের পরিচয় দিচ্ছে না, ধর্ম অসীমের পরিচয় দিচ্ছে । পাখি যেমন আকাশে ওড়ে এবং উড়তে উড়তে আকাশের শেষ পায় না, তেমনি আমরা অনস্তের মধ্যে যে অবাধ গতি রয়েছে তাতেই চলতে থাকব । পাখি পিঞ্জরের মধ্যে ছট্‌ফট্‌ করে তার কারণ এ নয় যে, সে তার প্রয়োজন সেখানে পাচ্ছে না, কিন্তু তার প্রয়োজনের চেয়ে বেশিকেই পাচ্ছে না । মানুষেরও তাই চাই। প্রয়োজনের চেয়ে বেশিতেই মামুষের আনন্দ । মানুষের ধর্ম হচ্ছে অনন্তে বিহার, অনস্তের আনন্দকে পাওয়া মানুষ যেখানে ধর্মকে বিশেষ দেশ-কালে \ome