পাতা:শান্তিনিকেতন (দ্বিতীয় খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শান্তিনিকেতন ছিল তারা আরামকে ধিক্কার দিয়ে বলে উঠেছে, ‘প্রাণকে আঁকড়ে থাকব না, প্রাণের চেয়ে মাহুষের মধ্যে আরো আরো বেশি আছে। কামানের গর্জনে মনুষ্যত্বের জয়সংগীত বেজে উঠেছে। মা কেঁদে উঠেছে, স্ত্রীপুত্র অনাথ হয়ে বক্ষে করাঘাত করছে। সেই কান্নার উপরে দাড়িয়ে সেখানে উৎসব হচ্ছে। বাণিজ্য ব্যবসায় চলছিল, ঘরে টাকা বোঝাই হচ্ছিল, রাজ্যসাম্রাজ্য জুড়ে প্রতাপ ব্যাপ্ত হয়ে পড়ছিল — ডাক পড়ল বেরিয়ে আসতে হবে । মহেশ্বর যখন তার পিণাকে রুদ্র নিশ্বাস ভরেছেন তখন মাকে কেঁদে বলতে হয়েছে, যাও।” স্ত্রীকে কেঁদে নিজের হাতে স্বামীকে বর্ম পরিয়ে দিতে হয়েছে। সমুদ্রপারে আজ মরণযজ্ঞে সেই প্রাণের মহোৎসব। সেই উৎসবের ধ্বনি আমাদের উৎসবের মধ্যে কি আজ এসে পৌঁছোয় নি ? ভীত মানুষ, আরামের জন্য লালায়িত মানুষ, যে প্রতিদিন তুচ্ছ স্বার্থটুকু নিয়ে কাড়াকড়ি মারামারি করে মরেছে, কে তাঁর কানে এই মন্ত্র দিলে সব ফেলে দাও, বেরিয়ে এসো' ! যার হাতে আরো'র ভাণ্ডার তিনিই বললেন, যাও । মৃত্যুকে অবহেলা করে , বেরোও দেখি ! বিরাট বীর মানুষের সেই পরিচয়, যে মানুষ আরো’র অমৃতপানে উন্মত্ত হয়েছে সেই মানুষের পরিচয় আজ কি আমরা পাব * না? আমরা কি এ দেশে অজ্ঞানদেবুতা উপদেবতার মন্দির তৈরি করে ষোড়শোপচারে তার পূজা করি নি ? তার কাছে মানুষের বুদ্ধিকে শক্তিকে বলি দিই নি ? যে অজ্ঞানমোহে মানুষ মানুষকে ঘৃণা করে দূরে পরিহার করে সেই মোহের মন্দির, সেই মূঢ়তার মন্দির কি আমাদের ভাঙতে হবে না ? আমাদের সামনে সেই লড়াই নেই ? আমাদের মার খেতে হবে আত্মীয়স্বজনের। আমরা দুঃখকে স্বীকার 8求●