পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১২৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিধান
১১৩

বন্ধু আমাকে আপনার করেছেন— সেই সকলের সামগ্রী আমার প্রকৃতি, আর সেই তাঁর আপনার সামগ্রী আমার জীবাত্ম।

 ২১ পৌষ

তিন

প্রকৃতির দিকে নিয়ম, আর আমাদের আত্মার দিকে আনন্দ। নিয়মের দ্বারাই নিয়মের সঙ্গে এবং আনন্দের দ্বারাই আনন্দের সঙ্গে আমাদের যোগ হতে পারে।

 এইজন্যে যে দিকে আমি সর্বসাধারণের, যে দিকে আমি বিশ্বপ্রকৃতির, যে দিকে আমি মানবপ্রকৃতির, সে দিকে যদি আমি নিজেকে নিয়মের অনুগত না করি তা হলে আমি কেবলই ব্যর্থ হই এবং অশাস্তির সৃষ্টি করি। একটি ধূলিকণার কাছ থেকেও আমি ভুলিয়ে কাজ আদায় করতে পারি নে; তার নিয়ম আমি মানলে তবেই সে আমার নিয়ম মানে।

 এইজন্যে আমাদের প্রথম শিক্ষা হচ্ছে প্রকৃতির নিয়ম-শিক্ষা এবং নিজেকে নিয়মের অনুগত করতে শেখা। এই শিক্ষার দ্বারাই আমরা সত্যের পরিচয় লাভ করি।

 এই শিক্ষাটির পরিণাম যিনি তিনিই হচ্ছেন ‘শান্তম্’। যেখানেই নিয়মের ভ্রষ্টতা, যেখানেই নিয়মের সঙ্গে নিয়মের যোগ হয় নি, সেইখানেই অশান্তি। যেখানেই পরিপূর্ণ যোগ হয়েছে সেখানেই শাস্তম্ যিনি তাঁর পরিপূর্ণ উপলব্ধি।

 প্রকৃতির মধ্যে ঈশ্বরের কোন্ স্বরূপ দেখতে পাই? তাঁর শাস্তস্বরূপ। সেখানে, যারা ক্ষুদ্র করে দেখে তারা প্রয়াসকে দেখে, যারা বৃহৎ করে দেখে তারা শান্তিকেই দেখতে পায়। যদি নিয়ম ছিন্ন হত,