পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পার্থক্য
১১৯

আঁকাবাঁকা পথ নিয়ে, কত বিস্তারের মধ্যে দিয়ে, ছোটোবড়ো কত আসক্তি-অনুরক্তিকে বিদীর্ণ করে জীবাত্মার প্রেমের নদী প্রেমসমুদ্রের দিকে গিয়ে মিলছে। প্রেমের শতদল পদ্ম অহংকারের বৃন্ত আশ্রয় করে আত্ম হতে গৃহে, গৃহ হতে সমাজে, সমাজ হতে দেশে, দেশ হতে মানবে, মানব হতে বিশ্বাত্মায় ও বিশ্বাত্মা হতে পরমাত্মায় একটি একটি করে পাপড়ি খুলে দিয়ে বিকাশের লীলা সমাধান করছে।

২৩ পৌষ

প্রকৃতি

প্রকৃতি ঈশ্বরের শক্তির ক্ষেত্র আর জীবাত্মা তাঁর প্রেমের ক্ষেত্র, এ কথা বলা হয়েছে। প্রকৃতিতে শক্তির দ্বারা তিনি নিজেকে ‘প্রচার’ করছেন, আর জীবাত্মায় প্রেমের দ্বারা তিনি নিজেকে ‘দান’ করছেন।

 অধিকাংশ মানুষ এই দুই দিকে ওজন সমান রেখে চলতে পারে না। কেউ-বা প্রাকৃতিক দিকেই সাধনা প্রয়োগ করে, কেউ-বা আধ্যাত্মিক দিকে। ভিন্ন ভিন্ন জাতির মধ্যেও এ সম্বন্ধে ভিন্নতা প্রকাশ পায়।

 প্রকৃতির ক্ষেত্রে যাদের সাধনা তারা শক্তি লাভ করে, তারা ঐশ্বর্যশালী হয়, তারা রাজ্য সাম্রাজ্য বিস্তার করে। তারা অন্নপূর্ণার বরলাভ করে পরিপুষ্ট হয়।

 তারা সর্ব বিষয়ে বড়ো হয়ে ওঠবার জন্যে পরস্পর ঠেলাঠেলি করতে করতে একটা খুব বড়ো জিনিস লাভ করে। অর্থাৎ, তাদের মধ্যে যাঁরা শ্রেষ্ঠ তাঁদের শ্রেষ্ঠ লাভ হচ্ছে ধর্মনীতি।

 কারণ, বড়ো হয়ে উঠতে গেলে, শক্তিশালী হয়ে উঠতে গেলেই, অনেকের সঙ্গে মিলতে হয়। এই মিলন-সাধনের উপরেই শক্তির