পাতা:শান্তিনিকেতন (১৯৩৪ প্রথম খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২২
শান্তিনিকেতন

অর্জুনের মতো ছদ্মবেশী মহাদেবকে বাণ মারে— সে বাণ তাঁকে স্পর্শ করে না, সেখানে না হেরে উপায় নেই।

 এই শক্তির ক্ষেত্রে আমরা ঈশ্বরের দুই মূর্তি দেখতে পাই, এক হচ্ছে অন্নপূর্ণা মূর্তি— এই মূর্তি ঐশ্বর্যের দ্বারা আমাদের শক্তিকে পরিপুষ্ট করে তোলে। আর-এক হচ্ছে করালী কালী মূর্তি— এই মূর্তি আমাদের সীমাবদ্ধ শক্তিকে সংহরণ করে নেয়; আমাদের কোনো দিক দিয়ে শক্তির চরমতায় যেতে দেয় না, না টাকায়, না খ্যাতিতে, না অন্যকোনো বাসনার বিষয়ে। বড়ো বড়ো রাজ্যসাম্রাজ্য ধূলিসাৎ হয়ে যায়, বড়ো বড়ো ঐশ্বর্যভাণ্ডার ভুক্তশেষ নারিকেলের খোলার মতো পড়ে থাকে। এখানে পাওয়ার মূর্তি খুব সুন্দর উজ্জ্বল এবং মহিমান্বিত, কিন্তু যাওয়ার মূর্তি হয়। বিষাদে পরিপূর্ণ নয় ভয়ংকর। তা শূন্যতার চেয়ে শূন্যতর, কারণ, তা পূর্ণতার অন্তর্ধান।

 কিন্তু, যেমনই হোক এখানে পাওয়াও চরম নয়, যাওয়াও চরম নয়— এখানে পাওয়া এবং যাওয়ার আবর্তন কেবলই চলেছে। সুতরাং, এই শক্তির ক্ষেত্র মানুষের স্থিতির ক্ষেত্র নয়। এর কোনোখানে এসে মানুষ চিরদিনের মতো বলে না যে এইখানে পৌঁছনো গেল।

 ২৪ পৌষ